বিশ্বের খুব স্বল্পসখ্যক দেশের সামরিক বিভাগে রয়েছে অশ্বারোহী বাহিনী। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেই ঐতিহ্যবাহী ৬১ অশ্বারোহী বাহিনীরই এবার অবলুপ্তি ঘটানো হবে। ঘোড়ার পরিবর্তে জওয়ানদের কাছে শোভা পাবে অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানানো হয়েছে, জয়পুরের এই রেজিমেন্টকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। একজন উচ্চপর্যায়ের আধিকারিক জানিয়েছেন, “দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তিনটি স্বায়ত্তশাসিত স্কোয়াড্রন রয়েছে। সেগুলোকে একই ছাতার তলায় এনে সাঁজোয়া বাহিনী বানানো হবে। এতে অতিরিক্ত কোনো খরচও হবে না। কারণ, ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট স্কোয়াড্রনগুলির নিজস্ব ট্যাঙ্ক রয়েছে।"
এই রূপান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পাঁচ মাস বা তারও অধিক সময় লাগবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণে বিধিনিষেধ জারি থাকায় নতুন জায়গায় রাখা হবে এই বাহিনীকে।
সূত্রের খবর, সেনাবাহিনীর ঘোড়াগুলিকে রাখা হবে দিল্লির আর্মি পোলো ও রাইডিং ক্লাবে, যেখানে ইতিমধ্যেই কয়েক ইউনিট সেনাবাহিনী রয়েছে।
আরও পড়ুন: পরিযায়ী শ্রমিকদের পায়ে হাঁটা আটকাতে পারে না আদালত, জানাল সুপ্রিম কোর্ট
ভারতীয় সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে আরো কীভাবে অত্যাধুনিক করা যায়, সেই বিষয় খতিয়ে দেখতে শেখাতকার কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিবি শেখাতকার। সেই কমিটিই ২০১৬ সালে তার রিপোর্ট জমা দেয়। এই কমিটির সুপারিশ মেনেই পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
অশ্বারোহী বাহিনী মূলত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির থাকত। তাছাড়া অশ্বচালিত খেলার সঙ্গেও যুক্ত থাকত। এই বাহিনী থেকেই বেরিয়েছেন একের পর এক বিখ্যাত রাইডার। ৬১ অশ্বারোহী বাহিনী ভারতীয় সেনাদলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় স্বাধীনতার ঠিক পরেই। যখন রাজার অধীনে থাকা রাজ্যগুলি ভারতের সঙ্গে মিশে যায়। সেই রাজ্যের সেনাবাহিনীর অবলুপ্তি ঘটানো হয়। তবে ঘোড়াদের কাজে লাগিয়ে একটি পৃথক রেজিমেন্ট তৈরি করা হয়। এই অশ্বারোহী বাহিনীতে যুক্ত করা হয় গোয়ালিয়র লান্সসার্স, মহীসূর লান্সসার্স এবং যোধপুর/ কাছায়া অশ্বারোহী বাহিনীকে।
এই বাহিনী অবলুপ্তির পরে রাষ্ট্রপতির নিজস্ব অশ্বারোহী বাহিনী বাদে ঘোড়ার কোনো অস্তিত্ব রইল না ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। রাষ্ট্রপতির বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক কাজে ব্যবহার করা হয় তাঁর অশ্বারোহী বাহিনীকে। দেশের মানুষ এই বাহিনীকে প্রধানত দেখতে পান ২৬ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দিল্লির বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন