দীর্ঘ নীরবতার পর ফের তেড়েফুঁড়ে উঠল সিবিআই। প্রাক নির্বাচনী বছরে সারদা-কাণ্ডে আবার তদন্ত প্রক্রিয়া জোরদার করার পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, রাজ্যের চার আইপিএস অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তারা ই-মেইল বার্তা পাঠিয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে। ওই চার অফিসার হলেন কলকাতা পুলিশের নগরপাল রাজীব কুমার, অতিরিক্ত নগরপাল (১) বিনীত গোয়েল, রেলের আইজি তমাল বসু ও প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান পল্লবকান্তি বসু।
জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে রাজ্য সারদার তদন্ত করার জন্য যে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন ট্রাইব্যুনাল (সিট) গঠন করেছিল তার শীর্ষে ছিলেন রাজীব কুমার। বাকিরা সিটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই চার আইপিএসকে ২১ থেকে ২৪ অগাস্টের মধ্যে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দপ্তরে হাজির হতে বলা হয়েছিল। যদিও বুধবার অবধি কেউ সেখানে যাননি। বা কোনও কিছু জানানো হয়নি কেন্দ্রীয় গোয়ন্দা সংস্থাকে।
আরও পড়ুন: শহরে সিবিআই, চিটফান্ড তদন্তের দ্রুত নিস্পত্তির আশা
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তকারীরা মনে করছেন, সারদা-কাণ্ডে রাজ্য গঠিত সিট বেশ কিছু তথ্য প্রমান লোপাট করেছে। যার ফলে সারদা তদন্ত বারে বারে বিঘ্নিত হয়েছে। একাধিকবার চেয়ে পাঠানো সত্ত্বেও কোনও নথি দেয়নি রাজ্য। সেই সময় সিটের প্রধান ছিলেন রাজীব কুমার। তিনি তখন ছিলেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার।
তদন্তকারীদের দাবি, সারদার তদন্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল একটি লাল ডায়েরি। মিডল্যান্ড পার্কে সারদার প্রধান দপ্তরে ওই ডায়েরি রাখা থাকত। ওই ডায়েরিতে বহু তথ্য রয়েছে। যা হাতে এলে তদন্তে গতি আসতে বাধ্য। সূত্রের খবর, ওই ডায়েরিতে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম রয়েছে, যাঁরা সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন।
তদন্তকারীদের আরও দাবি, জেরার সময় সারদা কর্তা থেকে শুরু করে অনেকেই জানিয়েছিলেন, ওই তালিকায় শুধু রাজনৈতিক নেতারা নন, অনেক রাঘব বোয়াল পুলিশ কর্তাও রয়েছেন। শুধু তাই নয়, সারদা চিট ফান্ডের ব্যবহৃত হার্ড ডিস্ক, পেন ড্রাইভ সহ আরও বেশ কিছু নথি বেহাত হয়ে গিয়েছে। ওই সব নথিপত্র কোথায় রয়েছে বা কীভাবে উধাও হয়ে গেল তা জানতে চায় সিবিআই। তাই এই জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে। তবে রাজ্যের ডিজির কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সারদা তদন্তে তথ্য প্রমাণ লোপাটের বিষয়টি আদালতেও জানিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা।