War in CBI: দফতরের দু নম্বর কর্তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে সিভিসি (সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন)-র কাছে চিঠি দিল সিবিআই। স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা সম্পর্কে অনাস্থা ছাড়াও সিবিআই জানিয়েছে, তাদের দফতরে এমন কিছু অফিসারকে আনার কথা চলছে, যারা বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় সন্দেহভাজন, এমনকি অভিযুক্তের তালিকাতেও রয়েছে। সেসব মামলার তদন্তভার রয়েছে সিবিআইয়ের উপরেই।
রাকেশ আস্থানার নিজেই বেশ কয়েকটি মামলায় সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন বলে জানিয়েছে সিবিআই। চিঠিতে লেখা হয়েছে, সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতে সংস্থায় কাকে নেওয়া হবে সে সম্পর্কে ডিরেক্টর আলোক নাথের অনুপস্থিতিতে রাকেশ আস্থানার সঙ্গে আলোচনা করা যাবে না।
একই সঙ্গে সিবিআই জানিয়েছে, তারা এর আগেও সংস্থায় কাউকে গ্রহণ করার আগে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়ার কথা বলেছিল।
এ ব্যাপারে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল সিবিআইয়ের মুখপাত্র, সিভিসি, সিবিআই ডিরেক্টর এবং সিবিআই স্পেশাল ডিরেক্টরের সঙ্গে। কিন্তু কোনও তরফ থেকেই সাড়া মেলেনি।
আগামী বছর লোকসভা ভোট, বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। সে দিক থেকে দেখলে সিবিআইয়ের এ প্রসঙ্গের অবতরণার সময়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। গত মাসেই একটি মামলায় শীর্ষ আদালত ইডি-র জয়েন্ট ডিরেক্টর রাজেশ্বর সিংয়ের বিরুদ্ধে চলা একটি মামলায় জানিয়ে দিয়েছে, তাঁকে কোনওরকম বিশেষ রক্ষাকবচ দেওয়া হবে না। রাজেশ্বর সিং বিতর্কিত এয়াকসেল ম্যাক্সিস মামলায় দুর্নীতিতে অভিযুক্ত।
গত ১০ জুলাই সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন থেকে ফোন করে সিবিআইকে জানানো হয় ১২ জুলাই সিবিআই সিলেকশন কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেই ফোনের সূত্র ধরেই সিভিসি-কে দুটি চিঠি দিয়েছে সিবিআই।
‘সিবিআইয়ের ডিরেক্টর অনুমোদিত’ এই চিঠিতে সিভিসিকে জানানো হয়েছে ১২ জুলাইয়ের বৈঠকের কোনও আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচি সিবিআইকে জানানো হয়নি।
সিবিআই তার চিঠিতে সিভিসিকে মনে করিয়ে দিয়েছে, এত কম দিনের নোটিসে আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচি ছাড়া সিলেকশন কমিটির বৈঠক নিয়ে এর আগেও নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে তারা। এ প্রসঙ্গে ১৮ মে তারিখে দেওয়া চিঠির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সংস্থায় কোনও আধিকারিককে গ্রহণ করার আগে তাঁর সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ সময় দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এর আগেও সিবিআই সিলেকশন কমিটির বৈঠকে এমন কিছু আধিকারিকদের নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যাঁরা সিবিআইয়ের তদন্তে অভিযুক্ত অথবা সন্দেহভাজন। ৬ জুলাইয়ের চিঠি ছাড়াও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে এ নিয়ে সিলেকশন কমিটির বৈঠকে এবং সিভিসি ও সিবিআইয়ের মাসিক বৈঠকেও তাদের অবস্থান জানানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
নির্ধারিত দিনে সিবিআই ডিরেক্টর আলোক ভার্মা সরকারি কাজে দেশের বাইরে ছিলেন। উরুগুয়েতে ইন্টারপোলের একটি বৈঠকে হাজির ছিলেন তিনি।
সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের তরফে টেলিফোনে আলোক নাথের অনুপস্থিতিতে পদমর্যাদায় ঠিক তাঁর পরেই থাকা রাকেশ আস্থানাকে বৈঠকে হাজির থাকার কথা বলা হয়। সে প্রসঙ্গের উল্লেখ করে সিবিআই তাদের চিঠিতে জানিয়ে দেয়, সিবিআই ডিরেক্টর সে ক্ষমতা রাকেশ আস্থানাকে দেননি।
এ প্রসঙ্গে চিঠিতে অসামরিক বিমান প্রতিরক্ষা দফতরের জয়েন্ট ডিরেক্টর জ্যোতি নারায়ণের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছে সিবিআই। চিঠিতে বলা হয়েছে, এর আগে রাকেশ আস্থানা সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর পদে জ্যোতি নারায়ণকে বসানোর জন্য সুপারিশ করেছিলেন, অথচ জ্যোতি নারায়ণ সিবিআইয়ের তদন্তে চলা একটি মামলায় সন্দেহভাজনের তালিকায় রয়েছেন।
গত বছর সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টরের পদে রাকেশ আস্থানাকে বসানোর পর সিভিস নেতৃত্বাধীন সিলেকশন কমিটি বিতর্কে জড়ায়। রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে তাঁকে সিবিআইয়ের দায়িত্বশীল পদে বসানোর ব্যাপারে আপত্তি তোলেন সিবিআই ডিরেক্টর আলোক ভার্মা। তাঁর সে আপত্তি কানে তোলেনি সিলেকশন কমিটি।
এবার আস্থানার বিরুদ্ধে অনাস্থার কথা প্রকাশ্যে আসার পর জল কোনদিকে গড়ায়, তা দেখার অপেক্ষায় সংশ্লিষ্ট মহল।