সিবিআইয়ের দুই শীর্ষ কর্তার মধ্যে টানাপোড়েন অব্যাহত। একনম্বরের সঙ্গে দু’নম্বরের নজিরবিহীন লড়াই ঘিরে সরগরম সিবিআই মহল। ছ'টি মামলায় সিবিআইয়ের বিশেষ ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। যার মধ্যে একটিতে নাম জড়িয়েছে কলকাতার ব্যবসায়ী দীপেশ চন্দকের। বিহারে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির তদন্তে অন্যতম সাক্ষী ওই দীপেশ চন্দক। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, দুর্নীতির অভিযোগে গত অগাস্ট মাসে তাঁর নামে এফআইআর দায়ের হওয়ার পরই কলকাতার বাড়ি থেকে সিবিআইয়ের একটি দল চন্দককে গ্রেফতার করে। কিন্তু পরে চন্দক পালিয়ে যান বলে খবর। সিবিআই কর্মীদের চন্দক নাকি এও জানিয়েছিলেন যে, তিনি গ্রেফতার হবেন, তা তিনি জানতেন। কারণ হিসেবে চন্দক বলেছেন যে, কেন্দ্রীয় তদন্তসংস্থা আস্থানাকে টার্গেট করেছে। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির তদন্তভার আস্থানার উপরেই ছিল। এখনও চন্দকের কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি।
চলতি মাসের ২১ তারিখ কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনকে সিবিআইের তরফে জানানো হয় যে, দুর্নীতির ছ'টি মামলায় রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে। ওই ছ'টি মামলার মধ্যে রয়েছে স্টারলিং বায়োটিক মামলা, সাংবাদিক উপেন্দ্র রাইয়ের গ্রেফতারি, নয়া দিল্লির চাণক্যপুরীতে পালিকা সার্ভিসেস অফিসার্স ইনস্টিটিউটের নামে এফআইআর ও চন্দক মামলা।
অন্যদিকে, আইআরসিটিসি দুর্নীতি মামলার তদন্তে সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মা ও অতিরিক্ত ডিরেক্টর এ কে শর্মা তাঁর কাজে হস্তক্ষেপ করেছেন বলে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন আস্থানা। তাঁর আরও অভিযোগ ছিল যে, সিবিআই ডিরেক্টর এবং অতিরিক্ত ডিরেক্টর এ মামলার তদন্তে তল্লাশি অভিযানও বন্ধ করেছিলেন।
আরও পড়ুন, আগে সিবিআই তদন্ত, পরে স্কুল, বলছে দাড়িভিট
এদিকে, সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, রাঁচিতে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার এজিএমকে গ্রেফতারের পরই চন্দকের নাম সামনে আসে। চন্দকের অঙ্গুলিহেলনেই এক মিডলম্যানের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ায় অভিযুক্ত ওই এজিএম। এ ঘটনার তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী আধিকারিকসহ দুই সিবিআই কর্তা কলকাতা গিয়েছিলেন চন্দককে রাঁচিতে নিয়ে আসার জন্য। হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে করে রাঁচি যাওয়ার কথা ছিল। চন্দকের গাড়িতে করেই সিবিআই আধিকারিকরা হাওড়া স্টেশন রওনা দিয়েছিলেন। মাঝপথে অসুস্থ বোধ করার কথা বলে সিবিআই আধিকারিকদের গাড়ি থেকে নামতে বলেন চন্দক। গাড়ি থেকে সিবিআই আধিকারিকরা নামতেই গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয় চন্দক। ওই গাড়িতে তদন্তকারী আধিকারিকের ব্যাগও রয়ে গিয়েছিল।
ওই ব্যাগের হদিশ না মেলায় স্থানীয় থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের করে সিবিআই। অন্যদিকে, তাঁকে বেআইনি ভাবে বন্দি করা হয়েছে, এ নিয়ে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন চন্দক। পরে তদন্তকারী অফিসারের ওই ব্যাগ কলকাতার সিবিআই কার্যালয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ কথা স্বীকারও করেছে সিবিআই। গোটা বিষয়টিই সিবিআই ডিরেক্টরের নজরে আনা হয়েছে।