করোনা থেকে সুস্থদের টিকাকরণের মেয়াদ বাড়াল কেন্দ্রের বিশেষ কমিটি। ছিল ৬ মাস, হয়ে গেল ৯! ব্যবধান মাত্র হপ্তাখানেকের! কেন্দ্র নিযুক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি চলতি মাসেই জানিয়েছিল, সুস্থ হয়ে ওঠার অন্তত ৬ মাস পর কোভিড আক্রান্তদের টিকা দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু মঙ্গলবার কেন্দ্রের কাছে কমিটির তরফে সুপারিশ করা হয়েছে, কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর টিকা নেওয়ার সময়সীমা ৯ মাস করা যেতে পারে।
এনটিএজিআই সূত্রের খবর, করোনা টিকাকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘ন্যাশনাল এক্সপার্ট গ্রুপ অন ভ্যাকসিন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর কোভিড-১৯’ (নেগভ্যাক)-এর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই টিকা-নীতিতে কিছু পরিমার্জন করার সুপারিশ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, এর আগে কোভিশিল্ডের প্রথম টিকা এবং দ্বিতীয় টিকা নেওয়ার ব্যবধান ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ থাকলেও এনটিএজিআই-এর পরামর্শেই তা বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করা হয়েছিল। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, প্রথম টিকার সঙ্গে দ্বিতীয় টিকার ব্যবধান বাড়ালে শরীরের অ্যান্টিবডিগুলি আরও সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাবে। পাশাপাশি, অন্তঃসত্ত্বা এবং সদ্য মা হওয়া মহিলাদেরও টিকা নেওয়ায় যোগ্য বলে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করেছে এনটিএজিআই।
সোমবার ফের রেকর্ড তৈরি দেশে। আবারও মৃত্যুতেই। দেশের নিরিখে নয় বিশ্বের নিরিখে রেকর্ড পার করছে অতিমারি সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা গিয়েছে একদিনে ভারতে করোনা কোপে প্রাণ গিয়েছে ৪ হাজার ৩৯৯ জনের।
কোভিড আক্রান্ত পৃথিবীর মৃত্যু রেকর্ডে এই সংখ্যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ১১ মে অর্থাৎ ৭ দিন আগে মৃত্যু ছিল ৪ হাজার ২০৫। যা সেই সময় অনুযায়ী সর্বোচ্চ ছিল। কিন্তু প্রশ্ন জাগছে অন্য ক্ষেত্রে। গত কয়েকদিনে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশ কিছুটা কমেছে। সাধারণ হিসেব মতো মৃত্যু সংখ্যাও কমার কথা। কিন্তু দু’সপ্তাহের ব্যবধানে পরিসংখ্যান বলছে উল্টো। আক্রান্ত কমলেও বাড়ছে মৃত্যু। এ যেন ব্যস্তানুপাতিক গতি।
ভয়ের কথা একটাই যে আগামী দিনে এই সংখ্যা হয়তো আরও কিছুটা বাড়বে। কারণ দেশের বেশ কিছু রাজ্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মৃত্যুহার বৃদ্ধির খবর আসছে। মহারাষ্ট্রে সোমবার মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৯ জনের। শনিবার থেকে সোমবারের মধ্যে মারা গিয়েছেন ২৮৯ জন। এক সপ্তাহ আগে এই সংখ্যা ছিল ২২৭। এর আগের সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছিল ৮৪৮ জনের। অথচ যে হারে বাড়ছে মৃত্যু তেমনটা হওয়ার কথা নয়। এটা জীবনের নয়, খাতা কলমের হিসেব!
অন্যান্য রাজ্যেও পরিস্থিতি এক। তবে হিসেবেও ভুল থাকছে। মার্চের মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে এপ্রিলে এমনটা দেখা গিয়েছে কর্ণাটকে। মহারাষ্ট্রেও তেমন গড়মিল রয়েছে। এই মুহূর্তে, পাঁচটি রাজ্য – মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ু – প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে ৩০০ জনের মৃত্যু হচ্ছে। উত্তরাখণ্ডের মতো অপেক্ষাকৃত ছোট একটি রাজ্যে ২২৩ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে নথিভুক্ত সময়ের আগে।