তুলনামূলকভাবে দৈনিক করোনা সংক্রমণের হার ও পজিটিভিটি রেট খতিয়ে দেখে পাঁচ রাজ্যকে সতর্ক করল কেন্দ্র। কেরল, মিজোরাম, মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং হরিয়ানাকে সংক্রমণ বিস্তারের উপর কড়া নজরদারি ও দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ বলেছেন, 'গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে ভারতে দৈনিক কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য কমেছে। গত কয়েকদিন ধরে ভারতেদৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হাজারেরও কম। সাপ্তাহিক পজিটিভিটি রেট ১ শতাংশের নীচে। কিন্তু বেশ কয়েকটি রাজ্যে তুলনামূলকভাবে কোভিড সংক্রমণের হার বেশি।'
ভূষণ কথায় বিশেষভাবে উঠে এসেছে কেরলের প্রসঙ্গ। গত সপ্তাহে কেরলে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২,৩৩১ জন। যা ওই সময়কালে গোটা দেশের আক্রান্তের ৩১.৮ শতাংশ। দক্ষিণী এই রাজ্যে গত সপ্তাহে করোনা সংক্রমণের পজিটিভিটি রেট ১৩.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে পৌঁছেছে ১৫.৫ শতাংশে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব ভূষণ কেরল সরকারকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন যে, উদ্বেগের উদীয়মান ক্ষেত্রগুলি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় কার্যকরী পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মিজোরামে গত সপ্তাহে ৮১৪ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে। যা ওই সময়ে ভারতের মোট সংক্রমিতের ১১.১৬ শতাংশ। রাজ্যের পজিটিভিটি রেটও ১৪.৩ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬.৪ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবের দেওয়া তথ্যানুসারে মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং হরিয়ানায় দৈনিক আক্রান্ত এবং গড় পজিটিভিটি রেটের হারের উদ্বেগের ইঙ্গিত করছে। রাজ্যগুলিকে কেন্দ্র করোনা টেস্ট, ট্র্যাক, ট্রিটমেন্ট, ভ্যাকসিনেশন এবং কোভিড রোধে বিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের নমুনার জিনোমিক সিকোয়েন্সিং এবং মামলার স্থানীয় ক্লাস্টার থেকেও পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া, স্বাস্থ্য মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে আন্তর্জাতিক বিমানে যাত্রীদের নমুনার জিনোমিক সিকোয়েন্সিং করার আহ্বান জানিয়েছে।
চারটি রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে কোভিডে মৃত্যুর জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করেছে বহু। এদের মধ্যে ৫ শতাংশ দাবিদারের আর্জি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় তিন সদস্যের দল মহারাষ্ট্র, কেরল, গুজরাট এবং অন্ধ্রপ্রদেশে যাচ্ছেন। উল্লিখিত রাজ্যগুলিতে ক্ষতিপূরণের দাবিদার সরকারিভাবে কোভিডে মৃতের পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি।
মহারাষ্ট্রে, ১.৪১ লক্ষ কোভিড মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি সরকারের। কিন্তু ক্ষতিপূরণের দাবিদার ২.১৩ লক্ষ। গুজরাটে কোভিডে ১০ হাজারে কিছু বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে। যদিও ক্ষতিপূরণের দাবিদার ৮৯ হাজারের বেশি। অন্যদিকে, হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলি সরকারিভাবে করোনায় মৃতের পরিসংখ্যানের চেয়ে ক্ষতিপূরণের পেয়েছেন অনেক কম। কেন্দ্রীয় দল ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পদ্ধতি, প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং ক্ষতিপূরণের পরিমাণ খতিয়ে দেখবে। চলতি বছর ২৪ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুসারে, মিথ্যা দাবিদারদের আইন অনুসারে শাস্তি হবে। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৫২ ধারা অনুযায়ীদোষীদের সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানা হতে পারে।
Read in English