দেশের দুই রাজ্যের দুই হোমে নাবালিকাদের সঙ্গে যৌন নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসার পরই নড়েচড়ে বসল কেন্দ্রীয় সরকার। উত্তর প্রদেশের দেওরিয়া ও বিহারের মুজফ্ফরপুরের হোমে যৌন নির্যাচতনের খবর প্রকাশ্যে আসতেই এবার দেশের বাকি হোমগুলোর প্রতি কড়া নজর দিচ্ছে কেন্দ্র। দেশের ৯,০০০ শিশু প্রতিষ্ঠানে সোশ্যাল অডিট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দু’মাসের মধ্যে জমা দিতে হবে এই অডিট রিপোর্ট।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় শিশু ও নারীকল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গান্ধী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "শিশুদের সব প্রতিষ্ঠানে যাতে অডিট করানো হয়, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে বলেছি শিশু সুরক্ষা কমিশনকে (এনসিপিসিআর)। আগামী দুমাসের মধ্যে এই অডিট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলেছি।" একটা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের সংখ্যা, কতগুলি শয্যা রয়েছে সেখানে, তার পরিসংখ্যান যেমন অডিটে তুলে ধরা হবে, তেমনই যাঁরা হোম চালাচ্ছেন তাঁদের সম্পর্কেও তথ্যাদি রাখা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। পাশাপাশি, হোমগুলোতে শিশুরা কী অবস্থায় রয়েছে, সেদিকেও নজর দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, তামিল নাড়ুর একটি অনাথ আশ্রমে শিশুদের যৌন হেনস্থার ঘটনায় ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ১৯ পাতার সোশ্যাল অডিট সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়েছিল কেন্দ্র। ২০১৭ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়েছিল, প্রতি বছরই সোশ্যাল অডিট করা দরকার। শুধু মাত্র যে পর্যবেক্ষণের জন্য সোশ্যাল অডিটের প্রয়োজনীয়তার কথা শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়ছিল তা কিন্তু নয়, একইসঙ্গে সোশ্যাল অডিট করলে স্বচ্ছতা যে বজায় থাকবে, সেকথাও জানানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন, উত্তরপ্রদেশে নাবালিকাদের হোম থেকে উদ্ধার ২৪ আবাসিক, নিখোঁজ ১৮
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, "৯,০০০ শিশু প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও বহু শিশু প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে, যেগুলো হয়তো রেজিস্টার করা হয়নি। সব রাজ্যে শিশু ও নারীদের জন্য হোম খোলা উচিত। যার মাধ্যমে ওদের আমরা নিরাপদে রাখতে পারি। ইতিমধ্যেই সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছি, তাঁরা যদি একটা সেন্ট্রাল হোম বানান। এজন্য আমরা অনুদানও দিতে রাজি, বা নির্ভয়া ফান্ড থেকেও টাকা দিতে রাজি।" মানেকা গান্ধী আরও জানান, জেলাভিত্তিক শিশু ও নারীদের হোমের তালিকার জন্য সব সাংসদদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। সাংসদদের এলাকায় হোমগুলো নিয়ে রিপোর্ট পেলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।