গত ৩রা মে থেকে মণিপুরে শুরু হওয়া হিংসার ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে প্রায় ৯০ জনের। দিন কয়েক আগেই মণিপুর সফরে গিয়ে ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েহিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার (৪ জুন), মণিপুরের সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিশন গঠন করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
পাশাপাশি, রাজ্যে জাতীয় সড়ক থেকে পথ অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন করেছেন অমিত শাহ। তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন গুয়াহাটি হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অজয় লাম্বা, অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক হিমাংশু শেখর দাস এবং অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস আধিকারিক অলোক প্রভাকর। একই সঙ্গে ইম্ফল-দিমাপুরের মধ্যে যে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ তোলার অনুরোধ জানিয়েছেন অমিত শাহ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত সরকার কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫২-এর অধীনে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তার রিপোর্ট পেশ করবে ।
মণিপুরে হিংসার ঘটনায় কড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মণিপুর হিংসার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাঁড়া করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই হিংসা রোধে গুচ্ছ দাওয়াইও দিয়েছেন। সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি শান্তি কমিটি গঠনের কথাও শোনা গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গলাতে। কিন্তু অমিত শাহের সফর শেষের মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ফের নতুন করে হিংসার আগুনে জ্বলে উঠলো মণিপুর।
শুক্রবার রাত থেকেই ছড়িয়ে পড়ে হিংসার ঘটনা। ইম্ফল পশ্চিম জেলার দুটি গ্রামেস ন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিদের হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন পুলিশের উর্ধ্বতম কর্মকর্তারা। রাজ্যে মোতায়েন রাজ্য পুলিশ এবং মণিপুর রাইফেলসের জওয়ানরা পালটা জবাব দিলে দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ চলে গুলির লড়াই। চার ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলা গুলির লড়াই শেষে এবং জঙ্গিরা পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি অঞ্চলে পালিয়ে যায়।
আহতদের ইম্ফলের আঞ্চলিক ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস এবং রাজ মেডিসিটিতে ভর্তি করা হয়েছে, দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।গত সপ্তাহে সুগনুতে সশস্ত্র কুকি জঙ্গিদের হামলার পর শুরু হওয়া এনকাউন্টারে সাতটি মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহগুলি জেএনআইএমএস মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গত ৩রা মে থেকে পার্বত্য রাজ্যের একাধিক জেলাতে হিংসার ঘটনাত কমপক্ষে ৯৮ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা একটি বিবৃতি অনুসারে, হিংসার ঘটনায় ৩৭,৪৫০ জন ঘরছাড়া হয়েছেন এবং রাজ্যজুড়ে ২৭২ টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। করছেন। রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সেনা ও আসাম রাইফেলসের প্রায় ১০ হাজার কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।