অনলাইন ক্লাস এবং পরীক্ষা দেওয়ার সময় বাচ্চাদের পাশে অভিভাবকরা থেকে তাদের পরীক্ষায় সাহায্য করতেন। এমনই দাবি দিল্লির একাধিক স্কুলের শিক্ষকদের। কিন্তু কেন এমন দাবি করলেন শিক্ষকরা? তারা জানিয়েছেন, একটি বাচ্চার অনলাইন ক্লাসের অথবা অনলাইন পরীক্ষায় যা পারফরম্যান্স অফলাইন ক্লাসে তার বিন্দুমাত্র নেই।
সেই সঙ্গে এমন প্রবণতার জন্য অভিভাবকদের দুষেছেন শিক্ষক সমাজের একাংশ। তাদের কথায়, এতে বাচ্চাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা যাছে। অফলাইন ক্লাসে এসে তাদের স্কোর তাদের অনেক বেশি নেগেটিভ করে তুলছে। এর পাশাপাশি শিক্ষকরা বলেছেন এমন অবস্থা থেকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
দিল্লির পাঁচটি সেরা স্কুলের শিক্ষকরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, ‘২০২০ সালে প্রথম অনলাইন পরীক্ষা চালু হয়। অনেক পড়ুয়ার ফলাফল আমাদের অবাক করেছিল। ক্লাসে যারা দীর্ঘদিন কম নম্বর পেয়ে আসত অনলাইন পরীক্ষায় দেখা গেছে তারাই প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে’।
কিন্তু সমস্যাটা এবার দেখা যাচ্ছে অফলাইন ক্লাস শুরু হতেই সেই সকল ছাত্ররা আবার তাদের মেরিট অনুসারে পারফর্ম করছে ফলে এতদিনের পরীক্ষায় যে মার্কস তারা পেয়ে এসেছে তার আর কোন মানেই থাকল না। সেই সঙ্গে এই ব্যাপারে অভিভাবকদের ভূমিকার সমালোচনা করে তারা বলেছেন, ‘অভিভাবকদের শুধুমাত্র ভাল নম্বর পাওয়ার জন্য বাচ্চাদের পাশে থেকে তাদের পরীক্ষায় সাহায্য করাটা এক বিপজ্জনক প্রবণতা। এর ফলে বাচ্চাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখন অফলাইন ক্লাসে তারা ভাল নম্বর পেতে পারছে না। ফলে তাদের মনোবল ভেঙ্গে পড়ছে’।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা এখন স্কুলে ফিরছে, শিক্ষকরা বলছেন কিছু ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ উদ্বেগজনক। “তারা অফলাইনে লেখার পরীক্ষা নিয়ে লড়াই করছে। আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে শেখার মধ্যে বিশাল ফাঁক রয়েছে। কাগজে-কলমে, এই বাচ্চাদের মেধাবী মনে হয়েছিল, কিন্তু এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি বাস্তব চিত্রটা পুরোপুরি আলাদা। কতটা অন্যায্য উপায়ের সাহায্য তারা নিয়েছিল, তা এখন আমাদের কাছে স্পষ্ট।”
আরো পড়ুন: SSC-র গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি: ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ প্রাক্তন উপদেষ্টা
দিল্লির এক বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক বলেছেন, অনলাইন ক্লাস যেদিন থেকে বন্ধ হয়েছে বাচ্চারা অফলাইন ক্লাসে ফিরেছে দেখা গেছে অনেকে তাদের নামের বানানটাও ঠিক করে লিখতে পারছে না। ভাল নম্বর তো দূরের কথা! পাশ করাটাও দূরহ হয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য। এর জন্য তাদের বাব মায়েরা সম্পূর্ণ রূপে দায়ী। আমাদেরও বাচ্চাদের আবার সবকিছু নতুন করে শেখাতে হচ্ছে’।
অন্যদিকে দিল্লির এক স্কুলের অধ্যক্ষের কথায়, “অনলাইন ক্লাসে পরীক্ষা দেওয়ার সময় এক পড়ুয়া তার মাইক্রোফোন বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছিল, স্কুলের শিক্ষক স্পষ্ট শুনতে পেয়েছেন শিশুটির অভিভাবক তাকে সবকিছু পাশ থেকে বলে দিচ্ছিল”।
Read full story in English