একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত রাজনৈতিক ময়দান। করোনা অতিমারীর প্রেক্ষাপট মাথায় রেখেই নির্বাচনের দিনক্ষণ, নিয়ম স্থির করবে নির্বাচন কমিশন। যদিও এখন ভাইরাসের প্রাবল্য কিছুটা কম। তবে কোভিডের মধ্যেই বিহার বিধানসভা নির্বাচন যেভাবে সম্পন্ন করেছে কমিশন, তা বাহবা কুড়িয়েছে সব মহলেরই। বাংলার জন্য কী পরিকল্পনা থাকছে? দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানালেন ভারতের মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার সুনীল অরোরা।
অতিমারীর মধ্যেই বিহার বিধানসভা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় কি বাড়তি কিছুটা আত্মবিশ্বাস পেল নির্বাচন কমিশন?
খুব কঠিন এবং একেবারে আলাদা একটি সময়ের মধ্যে বিহার নির্বাচন করতে হয়েছিল। আমরা আমাদের হোমওয়ার্ক করেই কাজে নেমেছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল একটাই নির্বাচন যেন পিছিয়ে দিতে না হয়। পরিকল্পনা করেই কাজ হয়েছে। আমি বিহারের নির্বাচন কমিশন প্রধান, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং অন্যান্য অফিসারদেরও অভিনন্দন জানাব এই পরিস্থিতিতেও তাঁরা যেভাবে কাজ করেছেন। নিয়ম মেনে ভোট দেওয়ার জন্য বিহারবাসী, মূলত মহিলাদেরও আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি। ১১ লক্ষ স্যানিটাইজার, প্রায় সাত কোটি গ্লাভস, ফেস শিল্ড, মাস্ক এসব দিয়ে সাহায্য করেছে বিহার সরকারও।
বিহারের নির্বাচন থেকে এমন কিছু শিখলেন যা আগামী দিনে কাজে লাগাতে চান?
সামনেই পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন। এরপর তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, আসাম, কেরালায় সব গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন রয়েছে। প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিহারের অফিসারদের নিয়ে অন্যান্য রাজ্যগুলির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই বিহারের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে স্বাস্থ্যর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে। পশ্চিমবঙ্গে ২৮ হাজার পোলিং বুথ হতে হবে। শুধু তাই নয়, সেগুলি যাতে মূল পোলিং বুথের কাছাকাছি থাকে সেই বিষয়টিও দেখতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা অতীতে বহুবার দেখা গিয়েছে। আগামী নির্বাচনে সেই হিংসা প্রতিরোধে কমিশন কী ব্যবস্থা নেবে?
এখনও পর্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ দল এসেছিল আমাদের কাছে। ২-৩টি চাহিদার কথা জানান হয়। তাঁরা চায় রাজ্যে আগে থেকেই সুরক্ষা মোতায়েন করা হোক, তবে তা মডেল কোড অফ কনট্যাক্ট মেনে। তাঁদের মত স্থানীয় ফোর্স সঠিকভাবে সবদিক দেখতে পারবে না। এখন বিষয়টি হল- এই স্থানীয় স্টাফ, সুরক্ষাবাহিনী আমাদের ইনস্ট্রুমেন্ট। আমরা তাঁদের অবিশ্বাস করতে পারি না। হ্যাঁ তাই বলে ব্যতিক্রম তো থাকেই। এখানে শুধু নয়, সব রাজ্যেই। তাই বলে অফিসার বদল আমরা ঠিক মানতে পারি না। তবে লোকসভা নির্বাচনের সময় একজন মুখ্যসচিব, একজন অতিরিক্ত ডিজি, পাঁচ পুলিশ কমিশনার, ডিজি (ইনটেলিজেন্স) বদল করতে হয়েছিল। তা নিয়ে আদালতে বিস্তর ঝামেলার মুখেও পড়তে হয়েছিল।
এবার তাই বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে। শুধু পরিস্থিতি নয়, আইনশৃঙ্খলা-খরচ এই সব দিক মেনে চলা হচ্ছে কি না সেগুলোও দেখভাল করবেন। এবারে আমরা পুরো প্রস্তুতি নিয়েই কাজ করব, যাতে প্রয়োজনমতো সব কাজ দ্রুততা এবং কঠোরভাবেই করতে পারি।
বাংলার বিরোধী শিবিরের দাবি নির্বাচনে আরও বেশি সংখ্যক সেন্ট্রাল পুলিশ ফোর্স (CSF) মোতায়েন করা হোক, যদি রাজ্য সরকার এর বিরোধিতা...(প্রশ্ন থামিয়ে)
এই নির্বাচন একটি চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন হতে চলেছে। এটি একটি অনুমানমূলক ধারণা যে সরকার এর (বাহিনী মোতায়েন) বিরোধিতা করবে। কত বাহিনী প্রয়োজন তা নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে। প্রতিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রেই সেটা হয়ে থাকে। আমরা তখনই বিশেষ সিদ্ধান্ত নেব যদি প্রয়োজন থাকে। আমরা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এখনও কিছু শুনিনি এ বিষয়ে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন