Advertisment

'নিচু জাতের' রান্না করা মিড ডে মিল ফিরিয়ে দিল উত্তরপ্রদেশের স্কুল পড়ুয়ারা

পালহারিয়া গ্রামের সব মিলিয়ে ৫০ টির কাছাকাছি পরিবারের বাস, যাদের বেশির ভাগই 'উচ্চ বংশ'। কেউ ব্রাহ্মণ, কেউ বা যাদবকূল। রমা দেবীর মত 'নিচু জাত'-এর অবহেলিত, লাঞ্ছিত হওয়াটাই সেখানকার রীতি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রতীকী ছবি (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)

স্কুল বলতে এখনও পড়া পড়া খেলা ওদের কাছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ক্লাসে ঢোকার বয়স। এই ঝগড়া আবার এই গলা জড়িয়ে ভাব করার বয়স। কোনও দ্বিধা ছাড়াই আয়েশাদের পাশে অর্চনাদের বসার দিন। অথচ এমন দিনেই টিফিন বেলায় মিড ডে মিলের খাবার খাওয়ার সময় গোল বাঁধল। খাবার খেতে অস্বীকার করল প্রাইমারি স্কুলের কচিকাচারা। আপত্তি কোথায়? না, "নিচু জাতের" হাতের রান্না তারা ছোঁবে না। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্ষোভ জানালেন ওদের অভিভাবকরাও।

Advertisment

উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর জেলার পালহারিয়া গ্রামের দিন কয়েক আগের ঘটনা। স্কুলের রাঁধুনি ছুটিতে থাকায় মিড ডে মিলের ভার পড়েছিল রমা দেবীর ওপর। রমা দেবী নিচু জাতের। সে রাজ্যের তফশিলি তালিকাভুক্ত। সে খবর চাউর হতে সময় লাগেনি বিশেষ। তৎক্ষণাৎ স্কুল চত্বরে জমায়েত হতে থাকেন পড়ুয়াদের মা-বাবারা। শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। ৭৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে মাত্র ৬ জন সে দিন রমা দেবীর রান্না করা মিড ডে মিল খেয়েছিল।

আরও পড়ুন: দলিত নয়, লিখতে হবে তফশিলি জাতি, সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে ফরমান তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের

পালহারিয়া গ্রামে সব মিলিয়ে ৫০ টির কাছাকাছি পরিবারের বাস, যাদের বেশির ভাগই 'উচ্চ বংশ'। কেউ ব্রাহ্মণ, কেউ বা যাদব কুল। রমা দেবীর মত 'নিচু জাত'-এর অবহেলিত, লাঞ্ছিত হওয়াটাই সেখানকার রীতি। অভিভাবকদের রোষের মুখে পড়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোজ কুমার বোঝানোর চেষ্টা করেন, রমা দেবী মাত্র এক দিনের জন্যই রান্না করছেন। কিন্তু তাতে ক্ষান্ত হননি অভিভাবকেরা।

প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিক এস আর দারাপুরি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, জাতের ভিত্তিতে এক জনের রান্না করা খাবার বয়কট করা রাজ্য সরকারের নির্দেশকে লঙ্ঘন করে। স্কুল পড়ুয়াদের মূল্যবোধ তৈরি করায় স্কুলের শিক্ষক এবং অভিভাবকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দারাপুরি। সীতাপুর জেলার বুনিয়াদি শিক্ষা আধিকারিক অজয় কুমার ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। সীতাপুরের মাহলি শহরের মহকুমা শাসক নীরজ প্রসাদ অবশ্য সুনিশ্চিত করেছেন, ঘটনার তদন্ত করা হবে। তিনি আরও বলেন, রমা দেবী অভিযোগ জানালে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।

Advertisment