গালওয়ান সংঘর্ষকে 'দুর্ভাগ্যজনক' এবং 'ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত মুহূর্ত' বলে বর্ণনা করলেন ভারতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত সান ওয়েইডং। ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমণে দুই দেশ সেনা ও কূটনীতিক পর্যায়ে আলোচনা চালাচ্ছে। এ সম্পর্কে ওয়েইডং বলেছেন যে, 'বিষয়টি উপযুক্তভাবে সামলানোর কাজ করছি আমরা।'
গত ১৮ অগাস্ট চিন-ভারত যুব ওয়েবমিনারে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ঐতিহাসের দৃষ্টিকোণের কথা তুলে ধরেন ভারতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত সান ওয়েইডং। মঙ্গলবার তাঁর সেই ভাষণ লিখিত আকারে প্রকাশ করেছে চিনা দূতাবাস। ওয়েবমিনারে ওয়েইডং বলেছেন, 'দুই উদীয়মান গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশীর নিজস্ব মতধারার মাধ্যমে রেখা টেনে দেওয়ার মানসিকতা বর্জন করা উচিত। একই সঙ্গে অপরের ক্ষতিতে নিজের লাভের পুরনো চিন্তাভাবনা সরিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তা না হলে দুই দেশই ভুল পথে চালিত হবে।'
তাঁর আরও সংযোজন যে, 'খুব একটা আগে নয়, সীমান্ত এলাকায় একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে, যা চিন ও ভারত কোনও দেশই দেখতে চায় না। বিষয়টি উপযুক্তভাবে সামলানোর কাজ করছি আমরা। এটা ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত মুহূর্ত।'
উন্নয়নের লক্ষ্য জয় করতে প্রতিবেশী দুই দেশের 'বিরোধ এড়িয়ে শান্তি বজায় রাখা উচিত' বলে মনে করেন ভারতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত।
আত্মনির্ভর ভারত গঠনে জোর দিয়েছে মোদী সরকার। প্রশ্নের মুখে ভারত-চিন সমঝোতা। এই বিষয়ে ওয়েইডং বলেছেন যে, 'বলপূর্বক পৃথক করার চেয়ে দুই বৃহৎ অর্থনীতির দেশের একে অপরকে চুম্বকের মত আকৃষ্ট করা উচিত।'
ভারতীয় চিনা ভাষা শিক্ষার আগ্রহ নিয়ে বলতে গিয়ে সান ওয়েইডং বলেছেন, 'যারা চিনকে বুঝতে আগ্রহী ও চিনা সংস্কৃতিতে ভালবাসে তাদের ভাষা শিক্ষায় জন্য পোক্ত চিনা শিক্ষকের দল প্রস্তুত। তবে এ ক্ষেত্রে ভারত সহায়তা করলেই তা সম্ভব।' উল্লেখ্য গালওয়ান সংঘর্ষের পর চিনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চুক্তি কেন্দ্রের নজরে রয়েছে।
দুই প্রাচীন সভ্যতা হিসেবে কীভাবে একে অপরকে শ্রদ্ধা জানানো এবং একই লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হওয়া উচিত, তাও তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায়, 'ভারত ও চিনের সংস্কৃতি, সমাজ ব্যবস্থা আলাদা। তবে আমরা সকলের লক্ষ্য এমন এক উন্নয়নের পথে যাত্রা যা আমাদের স্বকীয় জাতীয় অবস্থার জন্য উপযুক্ত।' তিনি বলেছেন, 'প্রেসিডেন্ট জিংপিং উন্নয়নের চিনা মডেলের আমদানি বা রফতানি করেন না। এ ক্ষেত্রে মুক্ত মনে পারস্পরিক সহযোগিতা কাম্য।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন