চিনের হাত ধরে আসামে আন্দোলনকারীদের হাতে পৌঁছচ্ছে ড্রাগ, পুলিশ প্রধানের দাবিতে চাঞ্চল্য

"রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় যুবকরা আন্দোলনের নামে অশান্তি ছড়িয়েছে। এদের বেশিরভাগেই নিষিদ্ধ ড্রাগস সেবন করে। এই ড্রাগসের চাষ মায়ানমারে হয়"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অনুষ্ঠানে ডিজিপি ভাস্কর জ্যোতি মহন্তের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির বরিষ্ঠ নেতা কবীন্দ্র পুরকায়স্থ। ছবি- বিশ্বকল্যাণ পুরকায়স্থ

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস হওয়ার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়েছে আসাম। আন্দোলনের মাধ্যমে অশান্তি ছড়িয়েছে উত্তর ভারতের আসামে। যদিও পুলিশ প্রধানের দাবি এই সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীরা ড্রাগস সেবন করে। শুধু তাই নয়, আন্দোলনকারীদের হাতে সেই ড্রাগস তুলে দিচ্ছে চিন, এমন চাঞ্চল্যকর দাবিও করেছেন আসামের পুলিশ প্রধান। "রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় যুবকরা আন্দোলনের নামে অশান্তি ছড়িয়েছে। এদের বেশিরভাগেই নিষিদ্ধ ড্রাগস সেবন করে। এই ড্রাগসের চাষ মায়ানমারে হয় এবং এগুলো মনিপুর ও মিজোরাম হয়ে বরাক উপত্যকায় ঢুকে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে যায়। ড্রাগসের চাষ এবং সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি সহায়তা করে চিন। আমাদের পুলিশ এর বিরুদ্ধে কড়া অভিযানে নেমেছে, কিন্তু সাধারন মানুষের সহায়তা ছাড়া এই চক্রকে আটকানো যাবে না" এমনটাই বললেন রাজ্যের আরক্ষী সঞ্চালক প্রধান ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত।

Advertisment

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের নৈশভোজ বয়কট অধীরের

শনিবার কাছাড় পুলিশ আয়োজিত 'মুখোমুখি' অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শিলচরে এসে বঙ্গভবনে এদিন বরাক উপত্যকার তিন জেলার সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় যোগ দেন ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত।। ড্রাগস, সিন্ডিকেট রাজ, মানব পাচার, ট্রাফিক, সীমান্ত সুরক্ষা, পুলিশ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সম্পর্ক সহ বিভিন্ন বিষয়ে মানুষকে বোঝানো হয়। উল্লেখ্য, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (কা) পাশ হওয়ার পরেরদিন রাজ্যের আরক্ষী সঞ্চালক প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত। তার কথায়, 'গুয়াহাটি সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় আমরা প্রায় দুই মাস ধরে এ ধরনের আন্দোলন সামাল দিচ্ছি। আন্দোলন যখন অশান্তি রূপ নিয়েছে বাধ্য হয়ে আমরা রাবার বুলেট চালিয়েছি। সাধারণত রাবার বুলেট কারো গায়ে লাগলে সে যন্ত্রণায় ছটফট করে, কিন্তু এই আন্দোলনকারীরা গুলি লাগলেও হাসে। এ ব্যাপারে আমরা জানতে পারি এরা আসলে ড্রাগ সেবন করে। নিষিদ্ধ ইয়াবা জাতীয় ট্যাবলেট খাওয়ার ৭-৮ ঘন্টা পর্যন্ত এদের গায়ে কোন অনুভূতি থাকে না। ফলে এদের খাওয়া-দাওয়ার প্রয়োজন হয় না আর এরা ক্লান্ত হয় না"।

আরও পড়ুন: জাফরাবাদে রাস্তা আটকে সিএএ প্রতিবাদ, বন্ধ মেট্রো স্টেশন

Advertisment

তবে কোথা থেকে আসছে এই ড্রাগসগুলো? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সামনে এল ভয়ানক তথ্য। জানা গিয়েছে, মায়ানমারের সান এলাকায় নিষিদ্ধ পোস্ত চাষ হয়। দেশের সরকার এগুলো বন্ধ করতে চাইলেও চিনের সহায়তায় বিপুল পরিমাণে এর চাষ হচ্ছে। চিনের ওহাও অঞ্চল থেকে এই ড্রাগস পাচারে সহায়তা করা হয়। বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশেও এই ড্রাগসের চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। মায়ানমার থেকে বাংলাদেশের বাজারে এগুলো পৌঁছে দেওয়ার সহজ রাস্তা হচ্ছে ভারতের মিজোরাম ও মনিপুর হয়ে বরাক উপত্যকা। তবে পুরোটা বাংলাদেশের না গিয়ে একটা অংশ অসমের বিভিন্ন এলাকায়ও পৌঁছে যাচ্ছে নিষিদ্ধ ড্রাগস।

আরও পড়ুন: ‘৩৭০ ধারা বিলোপে খুশি কাশ্মীর’

এলাকার মানুষের সঙ্গে মত বিনিময় বসার আগে পুলিশ প্রধান স্থানীয় বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গেও। বিএসএফ আধিকারিকরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপচারিতায় জানান, ড্রাগস এর একটি আন্তর্জাতিক পাচার চক্র ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে। এরা ফেন্সিং এর উপর দিয়ে ড্রাগসের ছোট ছোট প্যাকেট ওপারে ছুড়ে মারে। সেখানেও ড্রাগস পাচারকারী দলের সদস্যরা রয়েছে যারা প্যাকেটগুলো কুড়িয়ে নেয়। ‌ বরাক উপত্যকার সঙ্গে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তের বিরাট একটি অংশ রয়েছে। ফলে এদেরকে আটকাতে আমাদের অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়। এবার পুলিশের সহায়তায় এগুলো আটকানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।"

এদিন অনুষ্ঠানে ডিজিপি ভাস্কর জ্যোতি মহন্তের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির বরিষ্ঠ নেতা কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত চিকিৎসক রবি কান্নান, দক্ষিণ অসম প্রান্তের ডিআইজি দিলীপ কুমার দে। এছাড়াও উপত্যকার তিন জেলার পুলিশ সুপার সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মানব পাচার চক্র এবং দেহব্যবসা ইত্যাদি আটকাতেও বিশেষ পরিকল্পনার কথা জানান পুলিশ প্রধান। স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে নিয়ে লাগাতার অভিযান চালানোর আশ্বাস দেন তিনি।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Assam Citizenship Amendment Act