সীমান্তে উত্তেজনার আবহেই লাদাখে গিয়েছেন মোদী। নাম না করেই চিনকে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তারপরই পাল্টা তোপ দাগল বেজিং। চিন সম্পর্কে দিল্লির 'কৌশলগত ভুল ধারনা' এড়িয়ে চলা উচিত বলে জানিয়েছেন চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান তাঁর কথায়, 'মোদীর সফরের ফলে সীমান্তের পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।' একই সঙ্গে চিন জানিয়েছে, সেনা ও কূটনৈতিকস্তরে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মেটানো উচিত। বেজিংয়ের তরফে এহেন বিবৃতি অস্বাভাবিক বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে। ২০১৮ সালে তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সংক্রান্ত বিষয়ের পরামর্শদাতা সারতাজ আজিজ পাঁচ দেশের রাষ্ট্রদূতদের বলেছিলেন যে, ভারতের যুদ্ধবাজ মনভাব আঞ্চলিক শান্তির পক্ষে ক্ষতিকর ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্তে যুদ্ধবিরতি লংঘনের অভিযোগ দিল্লির কৌশলগত ভুল ধারনা।
চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান লাদাখে মোদীর সফর প্রসঙ্গে বলেন, 'ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফর সীমান্তের পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে।'
১৫ জুন নিয়ন্ত্রণরেখায় লাল ফৌজের হামলার পর থেকেই দেশজুড়ে চিনা পণ্য বয়কটের দাবি উঠেছে। ইতিমধ্যেই ৫৯ চিনা অ্যাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে চিনা কোম্পানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কেন্দ্রীয় সড়ক যোগাযোগমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি। এ প্রসঙ্গে ঝাও লিজিয়ান বলেছেন, 'বেশ কয়েকজন ভারতীয় রাজনীতিবিদের মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন ও দু'দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক।' চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্রের কথায়, 'ভারত-চিন সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি উভয় দেশের জন্যই জরুরি ও তা বজায় রাখার আহ্বান জানাই। উভয় দেশের স্বার্থ ও দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার উদ্দেশ্যেই ভারত-চিনের কাজ করা উচিত।'
মোদী সরকারের চিনা অ্যাপে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ঝাও লিজিয়ান জানিয়েছেন, 'ভারত-চিন সমঝোতায় দু'দেশের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে ও উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। কৃত্তিমভাবে তার উপর বাধা সৃষ্টি করলে তা শুধু বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিধি ভঙ্গই করবে না, একই সঙ্গে ভারতীয় স্বার্থের পক্ষেও হানিকারক হবে। ব্যবসায়ীক আইনি বৈধ আধিকার রক্ষায় চিন উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে।'
এরপরই চুক্তি অনুযায়ী দু'দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার কথা বলেছেন চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান। তাঁর কথায়, 'সেনা ও কূটনীতিক আলোচনার মাধ্যমেই দু'দেশের রাষ্ট্রনেতার সাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে নিয়ন্ত্রণরেখায় সমস্যা দূর হতে পারে। এজন্য ভার-চিন উভয়কেই কার্যকরী পদক্ষেপ করতে হবে।'
উল্লেখ্য শুক্রবার আচমকা লাদাখে গিয়ে নাম না করে চিনকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন মোদী। বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভারতের ভূখণ্ডের এক ইঞ্চিও ছাড়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'বিস্তারবাদের দিন শেষ। ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত যে, বিস্তারবাদীরা হয় পরাজিত হয়েছে অথবা সেই মনভাব থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন