এ যেন উলটপুরাণ। বলা ভালো, ভূতের মুখে রাম নাম। চিরবৈরী প্রতিবেশী চিনই এবার মুখ খুলল ভারতের প্রশংসায়। তা-ও আবার শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে। যে শ্রীলঙ্কার বন্দর আর জলসীমায় নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর জন্য চিনের চেষ্টার অন্ত ছিল না।
ভারতকে চার দিক থেকে ঘিরে ফেলতে যে জলসীমান্তকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল চিন। সেই জলসীমান্তের শ্রীলঙ্কায় ভারতের সাহায্যের হাত বাড়ানো নিয়ে শোনা গেল চিনের প্রশংসা। বুধবার চিনের বিদেশমন্ত্রী ঝাও লিজিয়ান এক সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের প্রশংসায় মুখ খোলেন।
লিজিয়ান বলেন, 'আমরা দেখেছি যে বিপদে শ্রীলঙ্কাকে ভারত আর্থিকভাবে যথেষ্ট সাহায্য করেছে।' তবে, চিনের এই প্রশংসাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না নয়াদিল্লি। কারণ, চিন বন্ধু দেশ হিসেবে মোটেও নির্ভরযোগ্য নয়। যা এখন পদে পদে উপলব্ধি করছে শ্রীলঙ্কা।
বর্তমানে শ্রীলঙ্কার আর্থিক অবস্থা তলানিতে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে বন্ধু প্রতিবেশী হিসেবে শ্রীলঙ্কার দিকে ভারত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আর, চিনের কাছ থেকে শ্রীলঙ্কা যতটুকু সাহায্যের আশা করেছিল, তা চেয়েও পায়নি। যা নিয়ে কটাক্ষ শোনা গিয়েছে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষের মুখে।
তিনি কটাক্ষ করেছেন, 'চিন এখন তার কৌশলগত নজর দক্ষিণ এশিয়া থেকে সরিয়েছে। চিনের কাছে এখন শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তান অগ্রাধিকার নয়। বরং, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, কম্বোডিয়া-সহ বিভিন্ন দেশেই এখন নজর দিয়েছে বেজিং।'
পালটা তা নিয়ে মুখ খুলেছে বেজিং। ঝাও লিজিয়ান এই প্রসঙ্গে বলেন, 'ঐতিহ্যগত এবং বন্ধু প্রতিবেশী হিসেবে চিন সবসময় শ্রীলঙ্কার পাশে আছে। শ্রীলঙ্কা বর্তমানে যে কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তা আমরা গভীরভাবে অনুভব করছি। আমরাও ভারত এবং অন্যান্য দেশের মতো শ্রীলঙ্কাকে সাহায্য করতে চাই।'
আরও পড়ুন- কম্বোডিয়াকে বন্দর বানাতে সাহায্য করছে চিন, তাতেই উদ্বেগে অস্থির আমেরিকা, কিন্তু কেন?
যদিও রাজাপক্ষর অভিযোগ, চিন মুখে এই সব বললেও শ্রীলঙ্কাকে প্রতিশ্রুতিমতো সাহায্য করেনি। উলটে, পুরনো ঋণ শোধের নাম করে শ্রীলঙ্কা থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে গিয়েছে। তাতে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি।
রাজপক্ষর অভিযোগ, তিনি নিজে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বারবার ঋণের অর্থ বর্তমান পরিস্থিতিতে কেটে না-নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তার সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য চিনের কাছে অর্থ চেয়েছিলেন। কিন্তু, সে নিয়ে জিনপিং এখনও পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে একটাও আশ্বাস দেননি বলেই অভিযোগ করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট।
Read full story in English