তাওয়াং সংঘর্ষ নিয়ে এবার সরাসরি মুখ খুলল চিন। মঙ্গলবার চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন জানিয়েছেন ইন্দো-চিন সীমান্তে পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক। স্থিতাবস্থা বজায় রয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়টি অত্যন্ত লঘু করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার কথা বলেছেন শি জিনপিং সরকারের প্রতিনিধি। যার ফলে চিনের মতলব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে, মঙ্গলবার সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, দুপক্ষের কেউ হতাহত হয়নি। কূটনীতির মাধ্যমে বেজিংয়ের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করবে নয়াদিল্লি। তবে চিনের দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সংঘর্ষের কথা উড়িয়ে না দিলেও চিনা আধিকারিকের কথায় জল্পনা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি, সংঘর্ষের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সীমান্তে তৎপর হয়েছে স্থল ও বায়ুসেনা। অরুণাচলের আকাশে মহড়া শুরু করেছে বায়ুসেনা। এলাকায় টহল দিচ্ছে সেনা।
লাদাখের গালওয়ানের পর এবার অরুণাচলের তাওয়াং। ফের মুখোমুখি সংঘর্ষ ভারতীয় ও চিনা জওয়ানদের। গত ৯ ডিসেম্বর ভোর রাতে দুই পক্ষ একে অপরের সঙ্গে হাতাহাতি, লাঠি-সোটা দিয়ে মারধর করে বলে খবর। ২০২০ সালের জুন মাসের পর ফের ভারত-চিন সেনার সংঘাতের ঘটনা সামনে আসায় অস্বস্তি বাড়ল নয়াদিল্লির। ঘটনায় দুজন ভারতীয় জওয়ান গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদের তড়িঘড়ি গুয়াহাটির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন তাওয়াং সংঘর্ষে কারও মৃত্যু হয়নি, কূটনীতির আশ্রয় নিচ্ছে নয়াদিল্লি, জানালেন রাজনাথ
এক সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, দুপক্ষের সংঘর্ষে সামান্য আঘাত পেয়েছেন জওয়ানরা। দুই পক্ষের জওয়ানরা এর পর এলাকা থেকে সরে যান। ঘটনার পর পরই আমাদের একজন কম্যান্ডার চিনা পক্ষের কম্যান্ডারের সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিং করেন। এলাকায় শান্তি-স্থিতবস্থা বজায় রাখার জন্য দুজনেই আবেদন জানান বৈঠকে।
গত নভেম্বরেই ইন্দোনেশিয়ার বালিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জি-২০ বৈঠকেই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু তাতে কোনওরকম বিষয় নিয়ে আলোচনা করেননি। অরুণাচলের এই সংঘর্ষ গত শুক্রবার ভোর রাত তিনটের সময় হয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর তাওয়াংয়ের ইয়াংসি পয়েন্টে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার এই অংশটা অন্যতম বিতর্কিত এলাকা বলে পরিচিত। দুপক্ষই এলাকায় টহলদারি করে। সেদিন রাতে প্রায় ৩০০ চিনা সেনা হামলা করে ভারতীয়দের উপর।
আরও পড়ুন গালওয়ানের বিভীষিকা ফিরল তাওয়াংয়ে, ভারতীয় জওয়ানদের উপর হামলা ৩০০ চিনা সেনার
উল্টোদিকে, ভারতীয় জওয়ানরা ছিলেন মাত্র ৭০-৮০ জন। কিন্তু অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে তাঁরা অনুপ্রবেশকারীদের হঠিয়ে দেন। ভয়ঙ্কর হাতাহাতি, লাঠি চালাচালি হয় দুপক্ষের মধ্যে। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে এই মারামারি।