নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মুখে সেনা সরানোয় সম্মতি জানিয়েছে চিন। উত্তেজনা প্রশমণে আলোচনাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, বেজিংয়ের কাজে ও কথায় বিস্তর ফারাক। প্যাংগং টিএসও-তে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করছে চিনা বাহিনী। ফিঙ্গার ৪-এ হেডিপ্যাড বানানোর সঙ্গে সঙ্গে প্যাংগং টিএসও-র দক্ষিণে হঠাৎই সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে লাল ফৌজ। গালওয়ানকে আগেই নিজেদের এলাক বলে দাবি করেছে চিনা সেনা ও বেজিং। এবার প্যাংগং টিএসও-কেই সেই দাবির অন্তর্ভুক্ত করতে মরিয়া চিন।
Advertisment
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক আধিকারিক বলেছেন, 'প্য়াংগং লেকের উত্তরে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করছে চিন। গত আট সপ্তাহে ওই এলাকায় বহু কাঠামো নির্মাণ করেছে লাল ফৌজ। এর মধ্যেই ফিঙ্গার ৪-এ হেলিপ্যাড নির্মাণের বিষয়টি নব সংযোজন। ফিঙ্গার ৩-তেও চিনা সেনার টহল বেড়েছে। ভারতীয়দের বারে বারেই ফিঙ্গার ২-য়ের দিকে সরে যেতে বলে চিনা সেনারা।'
আরেক পদাধিকারীর কথায়, 'চিনা কার্যক্রমেই স্পষ্ট যে, নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে বাড়তি সেনা সরিয়ে নেওয়ার কোনও উদ্দেশ্যই বা এপ্রিলের আগের পরিস্থিতির স্থিতাবস্থা ফেরানোর কোনও অভিপ্রায়ই তাদের নেই। তাই প্যাংগং নিয়ে আলোচনা, ডিসএনগেজমেন্ট বা ডি-এসকেলেশনের কোনও উদ্যোগ তারা নিচ্ছে না।' চিনের বিরুদ্ধে সজাগ ভারত। প্যাংগং-এ ভারতীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। তবে ভূখণ্ডগত কিছু বাধা-বিপত্তি ওই অঞ্চলে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
প্যাংগং ও তার উত্তর অংশ নিয়ে বারবরই ভারত-চিন বিরোধ রয়েছে। ফিঙ্গার ৮-এ চিনের স্থায়ী কাঠামো রয়েছে। এবার তারা আরও পশ্চিমে ৮ কিমি সরে গিয়েছে। ফিঙ্গার ৪-রেও লাল ফৌজ বাঙ্কার সহ নানান নির্মাণ চালাচ্ছে। কিন্তু ভারত কেন উপযুক্ত জবাব দিতে দেরি করছে? সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, ভারত দাবি করে যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ফিঙ্গার ৮-এর মধ্যে দিয়ে যায়। যদিও তা আরও পশ্চিমে বলে দাবি করে চিন। ঐতিহাসিকভাবে ফিঙ্গার ৮-এ আগে ভারতীয় বাহিনীর অধিকার ছিল। তবে ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় সড়ক তৈরি করে প্য়াংগংয়ের আরও পশ্চিমে সরে আসে চিনা বাহিনী। পাথুরে আঞ্চল হওয়ায় এখানে হেঁটেই নজরদারি চালাত ভারতীয় সেনা। ফলে সুবিধা মেলে চিনের।
ভারতের সেনা শিবির ফিঙ্গার ৩ থেকে খুবই কাছে। বর্তমানে যেখান পর্যন্ত চিনা সেনা মোতায়েন রয়েছে তা থেকে মাত্র ২ কিমি দূরত্বে রয়েছে এই শিবির। ফিঙ্গার ৪-এর কাছে ভারতের প্রশাসনিক বেস রয়েছে যেখান থেকে পাথুরে অঞ্চলের শুরু হচ্ছে।
চিনের কার্যকলাপে দ্রুত সমস্যা সমাধানের কোনও আশা নেই বলে মনে করছে ভারত সরকার। দু’মাসব্যাপী গালওয়ান উত্তেজনা মেটাতে চিনের একগুঁয়ে মনভাবকেই কাঠগড়ায় তুলছে দিল্লি।