পেলোসি-কাণ্ডের পর তাইওয়ান থেকে দূরেই থাকছে চিনের সংস্থাগুলো। ভয় একটাই, না-হলে চিন সরকারের বক্রদৃষ্টিতে তারাও পড়তে পারে। তাইওয়ানের পিছনে তবু আমেরিকা আছে। তাদের আর বাঁচার উপায় নেই। চিন ইতিমধ্যেই স্বশাসিত তাইওয়ানকে তাদের এলাকা বলে দাবি করেছে। গত সপ্তাহেই মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির চিনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তাইপেই সফর করেছেন। তাতে ক্ষুব্ধ চিন গত কয়েকদিন ধরেই তাইওয়ানে সামরিক মহড়া চালিয়েছে। বড় আকারের সেই সামরিক মহড়ায় চিনের যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ব্যবহৃত হয়েছে।
তাইওয়ানকে সবদিক থেকে ঘিরে ধরে হয়েছে সামরিক মহড়া। শুধু তাই নয়, তাইওয়ানের স্বশাসনকে কার্যত শিকেয় তুলে তার জল, স্থল, আকাশসীমা এই সামরিক মহড়ায় চিন ইচ্ছেমতো ব্যবহার করেছে। শুধু তাই নয়, চিনের সামরিক মহড়া চলাকালীন তাইওয়ানে সাইবার হামলা ঘটেছে। যাতে তাইওয়ানের সব সরকারি দফতর কার্যত ডিজিটাল দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। কারণ, কমপিউটার খুললেই শুধু একটা লেখা ফুটে উঠছিল- 'যুদ্ধবাজ পেলোসি ফিরে যাও।'
চিন সরকার ও চিনা প্রশাসন এইভাবে তাইওয়ানকে নিশানা করার পর চিনের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টেও তাইওয়ানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা তাইওয়ানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখাতে তাদের নিজেদের দেশের সংস্থাগুলোর পর্যন্ত সমালোচনা করেছে। ওই সব সংস্থাগুলোকে তাইওয়ানের স্বাধীনতার সমর্থক বলেও কটাক্ষ করেছে। তাতে রীতিমতো গুটিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে শিল্প সংস্থাগুলো।
আরও পড়ুন- শীঘ্রই বাজারে আসছে ওমিক্রন মোকাবিলার ভ্যাকসিন, আশ্বাস জার্মান সংস্থার
যেমন ক্যান্ডি ব্র্যান্ড স্নিকারস সংস্থা। যার মালিক গত সপ্তাহে একটি পণ্য বাজারে এসেছিলেন। সেই পণ্য কোন কোন দেশে তাঁরা রফতানি করছেন, তা দেখাতে তাইওয়ানের নাম রেখেছিলেন ওই সংস্থার মালিক। ব্যস্! আর যায় কোথায়। চিনের দেশপ্রেমী নেটিজেনরা তাঁকে প্রায় ছিঁড়ে খেয়েছেন। আর, তারপরই ওই পণ্য বাজারে আনার জন্য নেটিজেনদের কাছে ক্ষমাই চেয়ে বসেছেন ক্যান্ডি ব্র্যান্ড স্নিকারস সংস্থার মালিক।
শনিবার, আবার চিনের বৃহত্তম সয়া সস প্রস্তুতকারী সংস্থা ফোশান হাইতিয়ান ফ্লেভারিং অ্যান্ড ফুড কোম্পানি লিমিটেড ক্ষমাপ্রার্থনা করেছে। কারণ, তাদের এক কর্মচারী সোশ্যাল মিডিয়ায় পেলোসির তাইওয়ান সফরকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে সেই কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেই জানিয়েছে সস প্রস্তুতকারক সংস্থাটি। এটা একটা বা দুটো সংস্থার ঘটনা না। চিনের সব শিল্প সংস্থারই এখন এই হাল। আর, তাই তারা যেরকমভাবে পারছে, তাইওয়ানকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
Read full story in English