লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশ। প্রায় ৩,৪৮৮ কিলোমিটারজুড়ে ভারত-চিন সীমান্ত অবস্থিত। সরকারি তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে যে, ২০১৫ থেকে চিনা সৈন্যরা বহুবার ভারতীয় সীমানায় প্রবেশ করেছে। এক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ প্রকৃত সীমান্ত রেখা লংঘনের ঘটনা ঘটেছে চারটি জায়গা দিয়ে। এর মধ্যে তিনটি অবস্থিত পূর্ব লাদাখে ও একটি পশ্চিম সেক্টরে। সপ্তাহ কয়েক আগেই প্যাঙ্গনের কাছেসীমান্ত সমস্যা ঘিরে ভারত-চিন সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। চিনা সেনারা তরফে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লংঘনের বেশিরভাগ ঘটনা এই অঞ্চল দিয়ে হয়ে থাকে।
তবে, ২০১৯ সালে ধুমচেলার বিপরীতে ডেলেটাঙ্গো অঞ্চল দিয়েও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রমের মতো চিনা সেনার আগ্রাসন নজরে এসেছে। ওই বছর ডেলেটাঙ্গো দিযে প্রায় ৫৪ বার চিনা সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেছে। তবে, তার আগের চার বছরে চিত্রটা একেবারে অন্যরকম ছিল। ওই সময়কালে মাত্র তিনবার ডেলেটাঙ্গো দিয়ে ভারতীয় সীমানায় প্রবেশ করেছিল চিনা বাহিনী।
আরও পড়ুন- LIVE:নতুন করে আক্রান্ত ৬৫০০, মোট সংখ্যা পেরোল ১লক্ষ ২৫ হাজার
পূর্বাঞ্চলের ডিচু অঞ্চল দিয়ে সর্বাধিক (১৪.৫ শতাংশ)সংখ্যক চীনারা সীমান্ত লঙ্ঘন করেছে। তবে পূর্বাঞ্চলের অন্যত্র দিয়ে সীমান্ত লংঘনের ঘটনা অনেকটাই কম। ২০১৮, ২০১৯ সালে সিকিমের নাকুলা মাত্র দু'বার চিনা সেনারা সীমা লংঘন করে ভারতে প্রবেশ করেছিল। এইমাসের গোড়ায এই নাকুলাতেই দু'দেশের প্রকৃত সীমান্ত ঘিরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল ভারত-চিন সেনাবাহিনী।
মধ্যাঞ্চলে, উত্তরাখণ্ডের বারাহোতি দিয়েও চিনারা প্রকৃত সীমান্ত রেখা লংঘন করেছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে ০১৯ সালে এই অঞ্চল দিয়ে ২১বার ও ২০১৮ সালে ৩০বার চিনা সেনারা অবৈধভাবে ভারতে ঢুকে পড়েছে। এটিই একমাত্র জায়গা যেখানে উভয় দেশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সম্পর্কে তাদের নিজ নিজ উপলব্ধি উপস্থাপন ও মানচিত্র আদানপ্রদান করে।
আরও পড়ুন- ইন্দো-চিন নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় যুদ্ধ বিমান, বাড়তি সেনা মোতায়েনের দাবি খারিজ
প্যানঙ্গন টিএসও দিয়ে চিনা সেনারা যেখানে সর্বাধিক প্রকৃত সীমান্ত রেখা লংঘন করেছে, সেখানে গালওয়ান উপত্যকা দিয়ে মাত্র কয়েকটি এই ঘরনের ঘটনা নজরে পড়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্যাঙ্গন টিএসও- ১৩৫ কিমি দীর্ঘ হ্রদয়ের এক-তৃতীয়াংশ ভারত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, গত পাঁচ বছরের রেকর্ডে দেখা যাচ্ছে, এই অঞ্চল দিয়েই ২৫ শতাংশ চিনা সেনার সীমান্ত লংঘন করেছে। প্যাঙ্গন দিয়ে গত পাঁচ বছরে সীমান্ত লংগনের ঘটনা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। ২০১৮ সালে যে সংখ্যা ছিল ৭২, এক বছরের মধ্যে তা বেড়ে হয়েছে ১৪২। ২০১৫ সালে এইউ সংখ্যাই ছিল ৭৭।
উল্লেখ্য, প্যাঙ্গন এলাকায় ভারত-চিন প্রকৃত সীমান্ত ঘিরে দুই দেশের বিরোধ দীর্ঘ দিনের। ফলে প্রায়ই একে অপরের দিনে সীমান্ত লংঘনের মতো অভিযোগ তোলে দুই দেশের সেনাবাহিনী। নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একাধিকবার এই সমস্যার সমাধান করেছে দুই দেশের সেনাকর্তারা।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন