উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির আশঙ্কা ও উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লাগুর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কতগুলি জায়গা বাদ রাখা হল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করেছে, তাতে অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মিজোরামের ইনার লাইন পারমিটভুক্ত এলাকা এবং উত্তর পূর্বের ষষ্ঠ তফশিলভুক্ত এলাকাগুলিকে বাদ রাখা হয়েছে।
এর অর্থ, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের আওতায় যাঁরা ভারতীয় নাগরিক হবেন, তাঁরা অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামের বাসিন্দা হতে পারবেন না। ইতিমধ্যেই যাঁরা ভারতীয় নাগরিক, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই বিধিনিষেধ লাগু হবে।
একই সঙ্গে আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরার বড় অংশ ষষ্ঠ তফশিলের অন্তর্ভুক্ত হবার কারণে এই বিলের আওতা থেকে বাদ থাকবে।
বিলে বলা হয়েছে, "আসাম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরার যেসব অংশ সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিলের অন্তর্ভুক্ত এবং যেসব জায়গা ১৮৭৩ সালের বেঙ্গল ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রেগুলেশনের নোটিফিকেশনের আওতায় পড়ে, সেসব ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না।"
নাগরিকত্ব বিলে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সংশোধন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আগত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিষ্টান অবৈধ অভিবাসীদের যাতে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া যায়, সে কারণেই এই সংশোধনী।
বর্তমান আইনে কোনও অভিবাসী ১২ মাস টানা ভারতে বাস করার পর, এবং বিগত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর ভারতে বাস করার পর নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদন করতে পারেন। এই সংশোধনী অনুসারে, উক্ত তিনট দেশ থেকে আসা ওই নির্দিষ্ট ৬টি ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে ১১ বছরের সময়সীমা কমিয়ে ৬ বছর করবার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
গত শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন উত্তর পূর্বের রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। অমিত শাহ তাঁদের আশ্বাস দিয়েছিলেন ওই এলাকা ও রাজ্যগুলির যেসব জায়গায় ইনার লাইন পারমিট চালু রয়েছে, এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিলের অন্তর্ভুক্ত এলাকাগুলির ক্ষেত্রে এ বিল লাগু হবে না।
অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ড সরাসরি বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তু সমস্যায় প্রভাবিত নয়। মিজোরামের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। যে তিনটি রাজ্যে অভিবাসীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, সেই আসাম, ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ে ইনার লাইন পারমিট প্রথা চালু নেই।