Advertisment

কেন তামাদি হয়ে গেল নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল?

আরেকটি যে গুরুত্বপূর্ণ বিল তামাদি হয়ে গেল, তার মধ্যে রয়েছে মুসলিম মহিলা (বিবাহ রক্ষার অধিকার) বিল, ২০১৮। এই বিল ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর লোকসভায় পেশ হয় এবং ২৭ ডিসেম্বর পাশ হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Citizenship bill

নাগরিকত্ব বিল (২০১৬) তামাদি হয়ে গেল

বুধবার রাজ্যসভা সিনে ডাই হয়ে গেল। এর ফলে যেসব বিল লোকসভায় পাশ হয়েছিল কিন্তু রাজ্যসভায় হয়নি, সেগুলি তামাদি হয়ে পড়ল। এর মধ্যে কোনও বিল ফের তুলে আনতে হলে পরবর্তী লোকসভা অধিবেশনে সেগুলিকে পেশ করতে হবে। সপ্তদশ লোকসভা বসবে এপ্রিল-মে মাসে সাধারণ নির্বাচনের পর। ষোড়শ লোকসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩ জুন।

Advertisment

রাজ্যসভার নিয়ম অনুসারে, যেসব বিল লোকসভায় পাস হয়নি, এবং রাজ্যসভায় মুলতুবি রয়েছে - সেগুলি তামাদি হবে না, কিন্তু যেসব বিল লোকসভায় পাশ হয়েছে কিন্তু রাজ্যসভায় মুলতুবি রয়েছে সে বিলগুলি তামাদি হয়ে যাবে।

যে সব বিল তামাদি হয়ে গেল তার মধ্যে অগ্রগণ্য নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল।

কী রয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে?

২০১৬ সালের ১৯ জুলাই লোকসভায় এই বিল পেশ করা হয়। ১২ অগাস্ট যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে যায় এই বিল। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি যৌথ সংসদীয় কমিটি এ বিল সম্পর্কে তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। ৮ জানুয়ারি লোকসভায় বিল পাশও হয়ে যায়। রাজ্য সভায় বিল পেশের কথা ছিল ১৩ ফেব্রুয়ারি।

আরও পড়ুন, সমালোচনা করলেই দেশদ্রোহিতা নয়

এই বিলে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের কথা বলা হয়েছে, যে সংশোধনীর ফলে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে ভারতে বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং শিখ ধর্মাবলম্বীরা নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। এই তিন দেশ থেকে আসা ৬টি অ-মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্যতাও হ্রাস করার কথা বলা হয়েছে এই বিলে। এর আগে ভারতে ১৪ বছর বসবাস করলে নাগরিকত্ব দাবি করা যেত। সে নিয়ম সম্প্রতি বদল করো ১১ বছরের বসবাসের কথা বলা হয়েছে। এই বিলে উল্লিখিত গোষ্ঠীভুক্তদের জন্য ভারতে বসবাসের সময়সীমা কমিয়ে ছ'বছর করার কথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ বিজেপি নেতারা 'মা ভারতী'র সন্তানসন্ততিদের প্রতি ঐতিহাসিক যে ভুল করা হয়েছে, তা সংশোধন করার কথা বারংবার উল্লেখ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, ঔপনিবেশিক ভারতে দেশভাগের ফলে এই উদ্বাস্তুরা ঘরহারা হয়েছেন।

উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে এই বিল লাগু হলে ব্যাপক পরিমাণ বাংলাদেশি উদ্বাস্তুদের ভারতে ঠাঁই পেয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে গভীর উদ্বেগের সূচনা হয়। তাঁদের আতঙ্কের পিছনে রয়েছে জনতাত্ত্বিক বদলের আশঙ্কা, রয়েছে জীবনধারণের সুযোগ হারানোর শঙ্কা, এবং স্থানীয় সংস্কৃতি ক্ষয়ের ভয়। এই বিলের বিরুদ্ধে এক মাসের বেশি সময় ধরে প্রায় সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতই বিক্ষোভ দেখাতে থেকেছে।

তিন তালাক, আধার ও আরও যে বিলগুলি তামাদি হয়ে পড়ল

লোকসভায় পাশ হয়ে রাজ্য সভায় মুলতুবি রয়েছে, এমন বেশ কিছু বিল এদিন তামাদি হয়ে যায়।

এর মধ্যে অন্যতম হল আধার ও অন্যান্য আইন (সংশোধনী) বিল, ২০১৮ - যা ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি লোকসভায় পেশ হয় ও ৪ জানুয়ারিতে পাশ হয়ে যায়।

আরেকটি যে গুরুত্বপূর্ণ বিল তামাদি হয়ে গেল, তার মধ্যে রয়েছে মুসলিম মহিলা (বিবাহ রক্ষার অধিকার) বিল, ২০১৮। এই বিল ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর লোকসভায় পেশ হয় এবং ২৭ ডিসেম্বর পাশ হয়।

রয়েছে কোম্পানি (সংশোধনী) বিল, ২০১৮, যা ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর লোকসভায় পেশ হয় এবং ৪ জানুয়ারি, ২০১৯-এ পাশ হয়।

আরও পড়ুন, খুদে মগজে হিন্দুত্বের পাঠ! একল বিদ্যালয় নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্যে

ট্রান্সজেন্ডার পার্সন বিল ২০১৮ ও তামাদি হয়ে পড়ল। এই বিল ২০১৬ সালের ২ অগাস্ট লোকসভায় পেশ হয় এবং ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর লোকসভায় পাশও হয়ে যায়।

এ ছাড়াও ডিএনএ প্রযুক্তি বিল, মোটর ভেহিকেল (সংশোধনী) বিল সহ বেশ কয়েকটি বিলেরও একই পরিণতি ঘটেছে।

লোকসভায় মুলতুবি থাকার কারণে যে বিলগুলি তামাদি হয়ে পড়েছে তার মধ্যে রয়েছে আন্তঃরাজ্য নদীজল সমস্যা (সংশোধনী) বিল, বাঁধ নিরাপত্তা বিল প্রমুখ।

Citizenship Bill
Advertisment