সংবিধান অনুযায়ী দেশের একটি আদালতের রায় 'সরাসরি বাতিল' হতে পারে না। এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। শনিবার তিনি বলেছেন যে আইনসভা (লোকসভা, রাজ্যসভা, বিধানসভা) বিচারের নির্দেশের ঘাটতি 'পূরণ' করার জন্য একটি নতুন আইন প্রণয়ন করতে পারে। কিন্তু, তা সরাসরি বাতিল করতে পারে না। এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান যে, রায় দেওয়ার সময় সমাজ কী প্রতিক্রিয়া জানাবে, বিচারপতিরা সেই ব্যাপারে ভাবেন না।
বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আদালতের রায়দানের ক্ষেত্রে আইনসভা কী করতে পারে এবং আইনসভা কী করতে পারে না, তার মধ্যে একটি বিভাজন রেখা রয়েছে। যদি একটি রায় কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। আর, তা আইনের ঘাটতি তুলে ধরে, তবে সেই ঘাটতি মেটানোর জন্য আইনসভা একটি নতুন আইন প্রণয়ন করবে। আইনসভা যা করতে পারে না, তা হল রায়টিকে ভুল বলে মনে করা এবং তা বাতিল করা। আদালতের রায় আইনসভা সরাসরি বাতিল করতে পারে না।'
প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, বিচারপতিরা সাংবিধানিক নৈতিকতা দ্বারা পরিচালিত হন। তা মোটেও জনসাধারণের নৈতিকতা নয়। প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, 'বিচারপতির নির্বাচিত না-হওয়াটা আমাদের কোনও ঘাটতি নয়। বরং, সেটাই আমাদের শক্তি।' বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেছেন যে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হল জনগণের আদালত। যা মানুষের অভিযোগ বোঝার চেষ্টা করে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট যা করে, তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের থেকে অনেকটাই আলাদা।
আরও পড়ুন- ইডেনে টিকিট কেলেঙ্কারিতে চরম অসন্তুষ্ট রাজভবন, নজিরবিহীন পদক্ষেপ রাজ্যপালের
বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান, আমেরিকান সুপ্রিম কোর্ট এক বছরে ৮০টি মামলার রায় দেয়। আর ভারতে, 'আমরা এই বছর অন্তত ৭২,০০০ মামলার নিষ্পত্তি করেছি। এখনও দুই মাস বাকি আছে। এটি আমাদের কাজের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি আদালত হিসাবে আমাদের কাজের ক্ষেত্রে নাগরিকদের বিশ্বাস অব্যাহত রাখতে হবে।' ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার নীচুতলায় 'পরিকাঠামোগত বাধা' আছে বলে অভিযোগ করে বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান, বিচারবিভাগে মহিলাদের আরও বেশিসংখ্যায় অন্তর্ভুক্তিই লক্ষ্য।