মঙ্গলবার দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন যে ৯,০০০টিরও বেশি রায় আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভাষণে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কার্যকরী অংশগুলোকে আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করার পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তার পরে এই অনুবাদ করার কথা জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী আজ লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলোকে আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেছেন। এখনও পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের ৯,৪২৩টি রায় আঞ্চলিক ভাষায় এবং ৮,৯৭৭টি রায় হিন্দিতে অনুবাদ করা হয়েছে। আমরা এপর্যন্ত অহমিয়া, বাংলা, গারো, গুজরাতি, কন্নড়, খাসি, মালয়ালম, মারাঠি, নেপালি, ওড়িয়া, পাঞ্জাবি, তামিল, তেলেগু এবং উর্দু ভাষায় রায়গুলো অনুবাদ করিয়েছি। আমাদের চেষ্টা হল, সুপ্রিম কোর্টের জন্ম থেকে এখনও পর্যন্ত তার ৩৫ হাজার রায়ের সবগুলো দেশের বিভিন্ন ভাষাভাষী নাগরিকদের কাছে তাঁদের মাতৃভাষায় পৌঁছে দেওয়া। প্রতিটি ভাষায় আমাদের নাগরিকদের কাছে উপলব্ধ হওয়া উচিত। এতে আমাদের আদালতে আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার সহজতর হবে। কারণ, রায় আঞ্চলিক ভাষায় না-হলে, আপনি আঞ্চলিক ভাষায় তর্ক করতে পারেন বলে কোনও লাভ হয় না।'
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার তাঁর বক্তৃতায় মাতৃভাষা শিক্ষার ওপর জোর দেওয়ার প্রশংসা করেন। তিন বলেন, 'আমি সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানাই। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে এখন রায়ের কার্যকরী অংশটি বিবাদী যে ভাষায় কথা বলে, সেই ভাষায় অনুবাদ করা হবে। মাতৃভাষার প্রাসঙ্গিকতা বাড়ছে।' প্রধানমন্ত্রী যখন এই কথা বলছেন, সেই সময় প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ছিলেন দর্শকাসনে। তিনি নমস্কার করার ভঙ্গিমায় এই বক্তব্যে সাড়া দেন।
বিচারপতি চন্দ্রচূদ আরও বলেছেন যে ভারতের পতাকা 'সম্মিলিত ঐতিহ্য'-এর প্রতীক হিসেবে কাজ করে। আর, 'আমাদের জীবনে সাংবিধানিক ধারণা এবং মূল্যবোধগুলোকে বিকাশের অনুমতি দেওয়ার ঈশারা করে।' এর আগে, তিনি বলেছিলেন যে যদিও রায়গুলো ইংরেজিতে লেখা হয়, তা ৯৯.৯ শতাংশ নাগরিকের কাছে বোধগম্য নয়। বিশেষ করে আইনি আকারে তো নয়ই। প্রধান বিচারপতি বলেছেন যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইংরেজি রায়কে আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করতে ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন- পরিস্থিতি বেজায় জটিল! বেকারত্বের পরিসংখ্যান প্রকাশ বন্ধ করল চিন
সিজেআই জানিয়েছেন যে প্রাথমিক লক্ষ্য থাকবে হিন্দি, তামিল, গুজরাটি এবং ওড়িয়াতে অনুবাদ। ধীরে অন্যান্য সমস্ত নির্ধারিত ভাষায় রায় অনুবাদ করা হবে। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৯ সালে নয়টি আঞ্চলিক ভাষায় তার রায় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ শীর্ষ আদালতের এই পদক্ষেপকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন এবং স্বাগত জানিয়েছিলেন।