দেশের ৪৭তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নিলেন এস এ বোবদে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ হবে আগামী এক বছর পাঁচ মাস। ২০২১ সালের ২৩ এপ্রিল অবসর নেবেন বিচারপতি বোবদে। গত দু'বছরে সর্বোচ্চ আদালতের তিনটি ঐতিহাসিক রায়দানের অংশীদার ছিলেন বিচারপতি বোবদে। এছাড়াও, আইনজীবী হিসাবেও তাঁর পারদর্শিতা চোখে পড়ার মতো। কৃষকদের স্বার্থ নিয়ে দীর্ঘ দিন হাইকোর্টে সওয়াল করেছেন তিনি। আদালত আবমাননা মামলায় শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালা সাহেব ঠাকরের হয়ে ১৯৯৬ সালে বম্বে হাইকোর্টে সওয়াল করেছিলেন এস এ বোবদে। তাঁর তোলা যুক্তির ভিত্তিতেই পরে ওই মামলা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
Watch | Justice S.A. Bobde takes oath as 47th Chief Justice of India
Read | https://t.co/bOAp9nUHC8 pic.twitter.com/Xqe30oVeAm
— The Indian Express (@IndianExpress) November 18, 2019
সুপ্রিম কোর্ট গত ৯ নভেম্বর অযোধ্যা মামলার রায় দিয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের অন্যতম ছিলেন এস এ বোবদে। গোপনীয়তার অধিকার দেশবাসীর সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। ২০১৭ সালে সর্বোচ্চ আদালত এই রায় দেয়। সুপ্রিম কোর্টের ৯ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দেয়। বিচারপতিদের মধ্যে ছিলেন বোবদে। এছাড়াও, আধার কার্ড না থাকলে ভারতের কোনও ব্যক্তিকে ন্যূনতম সহায়তা বা রাষ্ট্রপ্রদত্ত ভর্তূতি থেকে বঞ্চিত করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ। সেই বেঞ্চের সদস্য ছিলেন বিচারপতি এস এ বোবদে।
আরও পড়ুন: পরবর্তী প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে: কে তিনি?
১৯৯৮ সালে তিনি সিনিয়র অ্যাডভোকেট হন। ২০০০ সালে তিনি বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২১ বছরের কর্মজীবনে তিনি আদর্শ হাউজিং কেলেঙ্কারি এবং লাভাসা কর্পোরেশন লিমিটেডের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলার মত বড় সড় মামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে তিনি মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হন।
বম্বে থেকে নাগপুর আদালত, আইনজীবী হিসাবে কৃষকদের স্বার্থে বহু মামলার সওয়াল করেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে। ১৯৯৬ সালে শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা বালা সাহেব ঠাকরে, সঞ্জয় রাউত, সুভাষ দেশাই ও এক সংবাদ পত্রের বিরুদ্ধে আদালত অবমানমান মামলা করেন এক ব্যক্তি। অভিযোগ ছিল, বালা সাহেব ঠাকরে শিবাজী পার্কের ব়্যালিতে এমন এক মন্তব্য করেন যার নির্যাস ছিল, বিচারপতি শিবসেনা প্রধানের পক্ষে রায় দানের জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা অর্থ দাবি করেছেন। আইনজীবী বোবদে যুক্তি দিয়ে আদালতে সওলা করেন। অভিযোগের ভিত্তি ও মামলা কীভাবে অ্যাডভোকেট জেনারেলের অনুমতি ছাড়া করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বম্বে হাইকোর্ট অবশ্য এক সপ্তাহের জন্য জেলে পাঠায় বালা সাহেব সহ অন্য অভিযুক্তদের। পরে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হলে আইনজীবী বোবদের তোলা প্রশ্নে মমামলাটি খারিজ হয়ে যায়। জানিয়েছেন নাগপুরের আইনজীবী প্রতীক রাজকুমার।
আরও পড়ুন: ধর্মীয়স্থানে মহিলাদের প্রবেশের ছাড়পত্রে ‘একক নিয়ম’ চালুর পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের সঙ্গে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে সিনিয়র চারজন বিচারপতি, রঞ্জন গগৈ, চেলেমেশ্বর, লোকুর ও জোসেফের মতপার্থক্যের সময়ে বোবদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের সময়ে বিষয়টি দেখার জন্য বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জি এনং ইন্দু মালহোত্রার সঙ্গে তাঁকেও মনোনীত করা হয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদের জন্ম হয়েছিল মহারাষ্ট্রের নাগপুরে, ১৯৫৬ সালের ২৪ এপ্রিল। বিচারপতি প্রহ্লাদ গজেন্দ্রগাদকর, বিচারপতি মোহম্মদ হিদায়াতুল্লাহ, বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচুড়ের পর মহারাষ্ট্র থেকে এস এ বোবদে চতুর্থ বিচারপতি যিনি দেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্বভার নিলেন।
Read the full story in English