Advertisment

'দুঃস্বপ্ন সত্যি হল', গগৈ ক্লিনচিট পাওয়ায় অভিযোগকারিণীর প্রতিক্রিয়া

২ মে, তদন্তকারী প্যানেলকে লেখা এক চিঠিতে চন্দ্রচূড় জানিয়েছিলেন অভিযোগকারিণীর অনুপস্থিতিতে ঘটনার তদন্ত করলে তা শীর্ষ আদালতের বিশ্বাসযোগ্যতাকে নষ্ট করবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্টের ইন হাউস কমিটি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন প্রাক্তন এক মহিলা কর্মী। রঞ্জন গগৈকে বিচারপতির প্যানেল ক্লিনচিট দেওয়ায় হতাশ হয়েছেন অভিযোগকারিণী মহিলা। তাঁর প্রাথমিক প্রক্রিয়া, "দুঃস্বপ্ন সত্যি হল"।

Advertisment

"আমি মনে করি একজন মহিলা নাগরিক হিসেবে আমার সঙ্গে চূড়ান্ত অন্যায় হয়েছে। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও আদালতের অন্তর্বিভাগীয় প্যানেল তাঁকে ক্লিন চিট দেওয়ায় আমি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। আমার এবং আমার পরিবারের সম্মানহানির বিরুদ্ধে আদালত এতটুকু নিরাপত্তা দিল না। আদালতের তদন্ত কমিটি জানিয়েছে তদন্ত রিপোর্টের কোনও কপি আমায় দেওয়া হবে না। আমি জানতেও পারব না ঠিক কী কী কারণে আমার দায়ের করা যৌন হেনস্থার অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া হল। এমনিতেই গত ২০ এপ্রিলের শুনানিতে আমার অনুপস্থিতিতেই আমার চরিত্র এবং অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।", বলেছেন অভিযোগকারিণী।

আরও পড়ুন, সিনিয়রিটি খোয়ানোর পর কাশ্মীর ছাড়তে হচ্ছে মেজর লিতুল গগৈকে

বিচারপতি বোবদে, ইন্দু মালহোত্রা এবং বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জির বেঞ্চ ৪ দিনের শুনানির পর গগৈয়ের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে রায় দেয় শীর্ষ আদালত। ন্যায়বিচার পাবেন না, সেই আশঙ্কা থেকেই গত ৩০ এপ্রিল অবশ্য তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী মহিলা। তারপর তদন্ত কমিটি ওই মহিলার অনুপস্থিতিতেই তদন্ত চালিয়ে গিয়েছে।

প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার মামলায় নয়া মোড় এসেছিল বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের পরামর্শের পর। ২ মে, তদন্তকারী প্যানেলকে লেখা এক চিঠিতে চন্দ্রচূড় জানিয়েছিলেন অভিযোগকারিণীর অনুপস্থিতিতে ঘটনার তদন্ত করলে তা শীর্ষ আদালতের বিশ্বাসযোগ্যতাকে নষ্ট করবে। তিনি আরও বলেছিলেন তদন্ত কমিটি বরং অভিযোগকারিণীকে একজন আইনজীবী অথবা পরামর্শদাতা নিয়োগে সাহায্য করতে পারে। গগৈয়ের বিরুদ্ধে মামলায় ‘ফুল কোর্ট’  আলোচনার দাবিও জানিয়েছিলেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়।

বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের চিঠির কথা প্রথম প্রকাশ করেছিল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসই। রবিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত বিচারকদের কাছে ‘ফুল কোর্ট’ (সাধারণত আদালতে যতজন বিচারপতি তদন্ত করেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে তার চেয়ে বেশি বিচারপতিকে নিয়ে তদন্ত করাকেই আইনি ভাষায় ফুল কোর্ট বলা হয়)। আলোচনার কোনও খবর ছিল না। সূত্রের খবর অনুযায়ী বিচারপতি বোবদে, ইন্দু মালহোত্রা এবং বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জির বেঞ্চের সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে দেখা করেন বিচারপতি নারিম্যান এবং চন্দ্রচূড়।

আরও পড়ুন, সাত রাজার ধন ‘দুই’ মানিক

তদন্তকারী প্যানেলকে লেখা চিঠিতে বিচারপতি চন্দ্রচূড় আরও পরামর্শ দিয়েছিলেন রুমা পাল, সুজাতা মনোহর এবং রঞ্জনা দেশাই, এই তিনজন অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিমকোর্ট বিচারপতিদের মধ্যে যে কোনও একজনকে প্যানেলের অংশ করা হোক।

গত ১৯ এপ্রিল ২৮ পৃষ্ঠার অভিযোগে ওই মহিলা জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ও ১১ অক্টোবর নিজের বাড়ির অফিসে তাঁকে যৌন নিগ্রহ করেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তাঁকে খারাপ ভাবে স্পর্শ করা হয় বলেও অভিযোগ। রঞ্জন গগৈয়ের বাড়ির অফিসেই পোস্টিং ছিল ওই মহিলার।

তিনি বলেছিলেন রঞ্জন গগৈয়ের প্রচেষ্টা প্রতিহত করার পরেই তাঁর চাকরি যায়। একই সঙ্গে, দিল্লি পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত তাঁর স্বামী ও দেওরকেও সাসপেন্ড করা হয়। প্রধান বিচারপতি গগৈ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে অবিশ্বাস্য বলে বর্ণনা করে বলেন, এ অভিযোগ অস্বীকার করাও তাঁর পক্ষে অবমাননাকর।

Advertisment