উদয়পুর হত্যাকাণ্ডে নিহত কানহাইয়া লালের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি এই হত্যাকাণ্ডকে 'নৃশংসতম ঘটনা' বলে কঠোর নিন্দা করেছেন। তাঁর সরকার দোষীদের শাস্তির ব্যাপারে কোনও কার্পণ্য করবে না-বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি, এই হত্যাকাণ্ডকে তিনি ধর্মান্ধতার ভয়াবহ রূপের প্রমাণ বলেও অভিযোগ করেছেন।
একইসঙ্গে, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে গেহলট শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখারও আবেদন জানিয়েছেন। কানহাইয়া লালের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন। তবে, গেহলট যাই বলুন না-কেন, দর্জি কানহাইয়া লালের হত্যার প্রতিবাদে এখনও উত্তপ্ত গোটা রাজস্থান।
কানহাইয়া লালকে খুনের কারণ, সে নুপুর শর্মার মন্তব্যকে সমর্থন করেছিল। সম্প্রতি বিজেপি নেত্রী নুপুর শর্মা এক বিতর্কে হজরত মহম্মদ সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভারতের একের পর এক রাজ্য।
বিক্ষোভ দেখাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ দলে দলে পথে নেমে আসেন। আগুন ধরানো হয় দোকান, গাড়ি-সহ বিভিন্ন জায়গায়। পালটা কড়া হাতে লাঠি উঁচিয়ে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়েছে। এমনকী, গুলিও ছু়ড়তে হয়েছে।
তারপর মোটামুটি সব চুপচাপ ছিল। কিন্তু, কানহাইয়া লালের ঘটনা যেন তাতে আগুন ধরিয়েছে। তাঁর হত্যাকাণ্ডের সময় কানহাইয়া লাল নিজের দর্জির দোকানেই ছিলেন। হত্যাকারীরা ক্রেতা সেজে সেই দোকানে যায়। পোশাকের মাপ দেওয়ার সময় কানহাইয়া লালকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সেই হত্যার ঘটনা ভিডিওবন্দি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েও দেয়। তারপরই বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজস্থান।
আরও পড়ুন- কেড়ে নেওয়া হোক তিস্তা শীতলবাদের ‘পদ্ম’ সম্মান, গেরুয়া মন্ত্রীর দাবি ঘিরে শোরগোল
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়ে গেহলট টুইট করেছেন, 'আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি এই বলে যে কোনও অপরাধী তা সে যে ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়েরই হোক না-কেন, রেহাই পাবে না। দোষীদের কঠোর সাজা দেওয়া হবে।' ইতিমধ্যে অভিযুক্ত দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএও। তদন্তে ধৃতদের পাকিস্তান যোগ উঠে এসেছে।
কিন্তু, কোনও কিছুতেই যেন বিক্ষোভ কমছে না। আর, এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিরোধী দল বিজেপির নেতা-কর্মীরা। পরিস্থিতি বুঝে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শান্তি, সম্প্রীতি বজায় রাখতে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। পালটা মুখ খুলেছে বিজেপিও। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই অভিযোগ করেছেন, কানহাইয়া লালের হত্যাকাণ্ড একটা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকায় আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধেও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বোম্মাই।
Read full story in English