এবার বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এনে তোলপাড় ফেললেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। ''খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই রাজ্যে চোরাচালান কার্যকলাপে মদত দেওয়া হচ্ছে, এই প্রবণতার জন্যই তাঁকে বাধ্য হয়ে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে।'' বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান।
পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সংঘাত একটা সময ফি দিনের চর্চার বিষয হয়ে উঠেছিল। রাজ্যপাল থাকাকালীন প্রায়ই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে সংঘাতে জড়াতে দেখা যেত জগদীপ ধনকড়কে। তবে এখন সেসব অতীত। এক সময় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ধনকড় এখন দেশের উপ-রাষ্ট্রপতি। অন্যদিকে, বাংলার বর্তমান রাজ্যপাল লা গণেশনের সঙ্গে মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের সম্পর্কও বেশ মধুর। তাঁরই আমন্ত্রণে বর্তমানে চেন্নাই ছুটে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে কেরলে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত মেটার ইঙ্গিত নেই। বরং তা বৃহস্পতিবার চরম আকার নিয়েছে। বামশাসিত কেরল সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের দ্বন্দ্ব এবার চরমে উঠেছে। এর আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরকারের কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
এবার কেরলে একাধিক দুর্নীতি নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। তাঁর দাবি, “আমি কখনই হস্তক্ষেপ করিনি। কিন্তু এখন দেখছি সব চোরাচালান কার্যক্রম মুখ্যমন্ত্রীর (সিএমও) দফতরের পৃষ্ঠপোষকতায় হচ্ছে। রাজ্য সরকার, সিএমও এবং মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরাই যদি চোরাচালান কার্যকলাপে জড়িত থাকেন, তবে অবশ্যই আমার হস্তক্ষেপ করার কারণ রয়েছে।”
আরও পড়ুন- রাজস্থান কংগ্রেসে চরম কোন্দল, গেহলটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে খাড়গের দ্বারস্থ পাইলট
মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের অভিযোগের পাল্টা জবাব দিতে গিয়েই বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেছেন কেরলের রাজ্যরাল আরিফ মহম্মদ খান। বিজয়নের অভিযোগ ছিল, ''রাজ্যপাল আরএসএস ও সঙ্ঘ পরিবারের বিশ্ববিদ্যালয় কেরলে তৈরির চেষ্টা করছেন।'' বুধবার তিরুবনন্তপুরমে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেছিলেন, ''রাজ্যপাল আরএসএস এবং সংঘ পরিবারের এরাজ্যে থাকা কেন্দ্রগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির চেষ্টা করছেন। তিনি এই গোষ্ঠীগুলির গেরুয়াকরণ এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন।''
মুখ্যমন্ত্রীর এহেন অভিযোগের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কেরলের রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, “তাঁরা (বাম সরকার, মুখ্যমন্ত্রী) বলছে আমি আরএসএস-এর লোকদের আনার জন্য এটা করছি (ভিসিদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন)। আমি যদি আমার ক্ষমতা ব্যবহার করে শুধু আরএসএস নয়, কোনও ব্যক্তিকেও মনোনীত করে থাকি, তাহলে আমি পদত্যাগ করব। প্রমাণ করতে না পারলে তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) পদত্যাগ করতে পারবেন?।" রাজ্যপালের আরও অভিযোগ, ''মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের আধিকারিকরাই কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তাঁদের আত্মীয়দের নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন যাঁরা ছিলেন অযোগ্য।"