যে হাত দিয়ে তিনি মেজাজ হারিয়ে ধাক্কা দিয়েছিলেন, সেই হাত দিয়েই এবার বন্ধুত্বের করমর্দন হল। আর এই মুহূর্তে শহরের বহুল চর্চিত ঘটনার মধুরেণ সমাপয়েৎ দেখল কলকাতা পুলিশের ডিসি সাউথের অফিস। সিএমআরআই হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসককে যাদবপুর থানার ওসির নিগ্রহ করার ঘটনায় কার্যত যবনিকা পতন ঘটল। এবং এই নিগ্রহের অভিযোগ ঘিরে গত দেড় দিনে যে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেই কালো মেঘ অনেকটাই কাটল বলে মনে করা হচ্ছে। ওসি এবং ওই জুনিয়র চিকিৎসকের মধ্যে 'মিটমাট' হয়ে গিয়েছে, এমনটাই জানিয়েছে লালবাজার।
এই প্রসঙ্গে এদিন অতিরিক্ত নগরপাল (৩) সুপ্রতিম সরকার জানান, "ডিসি সাউথের অফিসে দুপুর তিনটেয় ওই চিকিৎসক এবং ওসি পুলক দত্ত দেখা করেন। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে প্রায় একঘণ্টা ধরে দু'জনের কথা হয়েছে।" শুধু তাই নয়, গোটা ঘটনায় ওসি দুঃখপ্রকাশ করেন বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন, ডাক্তারকে চড় মারিনি, ধাক্কা মেরেছি, বললেন যাদবপুরের ওসি
তবে কি নাটকের যবনিকা পতন হল? লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, দু'তরফের মধ্যে কথা হয়েছে ভালভাবে ঠিকই, তবে এ ঘটনায় 'অনুসন্ধান' চালানো হচ্ছে।
ওসি পুলক দত্ত। ছবি: ফেসবুক
কী এমন কথা হল, যে বরফ গলল? জবাবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে ডিসি সাউথ মিরাজ খালিদ শুধু এটুকুই বলেন, "দু'জনের কথা হয়েছে। মিটমাট হয়ে গিয়েছে।"
অন্যদিকে, সিএমআরআই-তে এই কাণ্ডের পর রুবি জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত হন যাদবপুর থানার ওসি। এদিন লালবাজারের তরফে জানানো হয়, ওসিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে সিএমআরআই-তে জুনিয়র চিকিৎসক শ্রীনিবাস গেদামকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে পুলকবাবুর বিরুদ্ধে। ঘটনা সামনে আসতেই নিন্দায় সরব হয় বিভিন্ন মহল। পরিস্থিতি এমন ঘোরালো হয়, যে শেষ পর্যন্ত গতকাল রাতে নিজেদের ফেসবুক পেজে ওসির বক্তব্য তুলে ধরে এ ঘটনা নিয়ে পোস্ট করে কলকাতা পুলিশ, এবং জানায় যে ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত করা হবে। এই পোস্টেও প্রতিক্রিয়ার বন্যা বয়ে যায়, এবং চিকিৎসক মহলের একাংশ কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে পুলিশের বিরুদ্ধে।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলকবাবুই নিজের বক্তব্য জানাতে চেয়েছিলেন, তাই ঘটনা সম্পর্কে ওঁর বক্তব্য তুলে ধরা হয়। ওই পোস্টে জুনিয়র চিকিৎসককে মেজাজ হারিয়ে ধাক্কা মারার কথা স্বীকার করলেও চড় মারেননি বলে দাবি করেন ওসি।