কলেজিয়াম ইস্যুতে বিতর্কের মাঝেই সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম নিয়ে মুখ খুললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতI কলেজিয়ামের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে এই প্রশ্নের উত্তরে প্রাক্তন সিজিআই কলেজিয়াম ব্যবস্থার পক্ষেই সায় দিয়ে বলেন, ‘কলেজিয়াম সিস্টেম বদলের কোন দরকার নেই’।
বিচার বিভাগে নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিচার বিভাগের মধ্যে সংঘাত আবহের মাঝেই কলেজিয়াম নিয়ে বড় বিবৃতি দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের অনেক প্রতিনিধি কলেজিয়াম ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন। একই সঙ্গে কলেজিয়ামের পক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন বিচার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। এসবের মাঝেই সর্বশেষ বক্তব্য এসেছে ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের কাছ থেকে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, কলেজিয়াম ব্যবস্থা বদলানোর দরকার নেই। কেন্দ্রের সঙ্গে বিচারবিভাগের সংঘাতের আবহে প্রাক্তন CJI-এর মন্তব্য যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ।
ভারতের আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বছরের শুরুতে ভারতের প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড়কে চিঠি লিখে কলেজিয়াম ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের আর্জি জানান। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামে সরকারি প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় বিচার বিভাগে কোনো সংরক্ষণ নেই। কিন্তু বিচারকদের, বিশেষ করে কলেজিয়াম সদস্যদের, বিচারক নিয়োগের জন্য সুপারিশ করার সময়, বিচার বিভাগকে এই বিষয়গুলি মাথায় রাখা উচিৎ। রাজ্যসভায় আইনমন্ত্রীকেও এও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে সরকার হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও বিল আনার পরিকল্পনা করছে কিনা। এই প্রশ্নের একটি লিখিত উত্তরে, রিজিজু উত্তর দেন যে সরকার এখনই এমন কোনও বিল আনার কথা চিন্তা-ভাবনা করছে না।
আরও পড়ুন: < ‘জিরো টলারেন্স নীতিই কোমর ভেঙেছে সন্ত্রাসীদের’, বললেন শাহ >
গতকালই বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং বিচারপতি অরবিন্দ কুমারকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকার এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং গুজরাট হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরবিন্দ কুমারকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। নতুন ২ বিচারপতির নিয়োগের ফলে, সুপ্রিম কোর্ট এখন থেকে ৩৪ জন বিচারপতির পূর্ণ ক্ষমতায় কাজ করবে। শেষবার সুপ্রিম কোর্টে ৩৪ জন বিচারপতির পূর্ণ ক্ষমতায় তার কার্যক্রম চালায় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর নভেম্বর পর্যন্ত।
এর আগে গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনেই পাঁচ বিচারপতির নাম অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিচারপতিদের নিয়োগের সুপারিশ রাষ্ট্রপতি ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হলে মেলে অনুমোদ্নও। সোমবারই নতুন পাঁচ বিচারপতি শপথ নেন। পাঁচ নতুন বিচারপতি হলেন – রাজস্থান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পঙ্কজ মিঠাল, পাটনা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় করোল, মণিপুর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার, পাটনা হাইকোর্টের বিচারপতি আসাউদ্দিন আমানুল্লাহ ও এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি মনোজ মিশ্র।
সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম মাত্র কিছুদিন আগেই বিচারপতি পদে নতুন করে আরও দু’জনের নাম সুপারিশ করেছিল। এবার কলেজিয়ামের সেই সুপারিশকেও সিলমোহল দিল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম গত ৩১ জানুয়ারি, শীর্ষ আদালতের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং গুজরাট হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের নাম সুপারিশ করেছিল।