এবার হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করেও সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ দিল্লিতে। শনিবার হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত শোভা যাত্রা বেরনোর পরেই উত্তর-পশ্চিম দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় পাথর ছোঁড়া হয়েছে এবং গভীর রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তেজনাপূর্ণ ছিল।
২০২০-এর ফেব্রুয়ারির উত্তর-পূর্ব দিল্লি দাঙ্গার পর এটিই রাজধানীতে প্রথম বড় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ২০২০-এর দাঙ্গায় দিল্লিতে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বহু মানুষ আহতও হয়েছিলেন। যদিও শনিবার হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে হওয়া সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের ৬ কর্তা-সহ ১০-১২ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যদিও প্রত্যেকেই এখন ভালো আছেন।
শনিবার এই সংঘর্ষ শুরুর পরেই দিল্লির সব এলাকার পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন খোদ পুলিশ কমিশনার। দিল্লি পুলিশের সব শীর্ষ কর্তাকে পাঠানো ওই নির্দেশিকায় পুলিশ কমিশনার বলেন, ''জাহাঙ্গিরপুরীর সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির জেরে প্রতিটি জোনের পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার অফিসাররা ময়দানে থাকবেন। দিল্লির কোনও অংশেই যাতে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি বিঘ্নিত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। বাকি অফিসাররাও সতর্ক থাকবেন।''
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রা চলাকালীন দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়। এক সিনিয়র পুলিশকর্তা বলেন, ''গন্ডোগোল বাড়তে শুরু করতেই উভয় পক্ষ একে অপরের দিকে পাথর ছুড়তে শুরু করে। সাধারণ নাগরিকের সম্পত্তির ক্ষতি করেছে ওরা। এমনকী বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।'' এদিকে, শনিবার এই ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় পৌঁছে যান পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত বাহিনীকে ডাকা হয়। উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে পুলিশকর্মীদের উপর চড়াও হয় জনতা। পাথরের আঘাতে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও আহত হন।
আরও পড়ুন- দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীর ঘটনায় উঠে এল ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব
শনিবার সংঘর্ষের পরেই কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করে পুলিশ। রাতেই গোটা এলাকায় লকডাউন করে দেওয়া হয়। রাস্তায় ব্যারিকেড করে রাখা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় বিশাল সংখ্যক পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা পেশায় মেকানিক আকাশ ঠাকুর জানান, তিনি তাঁর বাইকটি রেখে কুশল সিনেমার কাছে ব্লক বি-এর ভিতর দিয়ে যাওয়া শোভাযাত্রায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময়ে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়।
দিল্লির পুলিশ কমিশনার টুইটারে লিখেছেন, ''পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জাহাঙ্গিরপুরী ও অন্যান্য স্পর্শকাতর এলাকায় পর্যাপ্ত অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের গ্রাউন্ডে থাকতে বলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখতে বলা হয়েছে। দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব এবং ভুয়া খবরে কান না দেওয়ার জন্য নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে।''
Read full story in English