মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ভারত হয়ে পাচার হচ্ছে মায়নামারের বিলাসবহুল সেগুন কাঠ, চিনের পর ভারত হয়ে উঠছে অন্যতম 'লিকেজ কান্ট্রি' ! মায়ানমারের ঘন জঙ্গল থেকে ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে 'সেগুন কাঠ' পাচারের অন্যতম দেশ হয়ে উঠেছে ভারত। সেগুন কাঠ, আসবাবপত্র এবং 'বিলাসবহুল ইয়টের' জন্য অতি মূল্যবান।
Advertisment
মায়ানমার থেকে ফাঁস হওয়া কাস্টমস ডেটা অনুসারে জানা গিয়েছে মায়নামার থেকে ভারত হয়ে মূল্যবান সেগুন কাঠ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে রমরমিয়ে পাচার হচ্ছে। চিনের পর ভারত হয়ে উঠেছে অন্যতম 'লিকেজ কান্ট্রি' ! মায়ানমারে ২০২১ সালের 'সামরিক অভ্যুত্থানের' পর থেকেই কাঠের ব্যবসার ওপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। খাতায় কলমে সেই নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রেকর্ড অনুসারে দেখা যায়,চিনের পর সেগুন কাঠ পাচারের ভারত হয়ে উঠেছে অন্যতম 'লিকেজ কান্ট্রি।
গ্লোবাল ওয়াচডগ ফরেস্ট ওয়াচের তথ্য অনুসারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল ২০২২ এর মধ্যে, ভারতীয় সংস্থাগুলি প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের সেগুন আমদানি করেছে। যা মোট সেগুন কাঠ রপ্তানির প্রায় এক চতুর্থাংশ । দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস যখন নাগপুরের একাধিক সংস্থা ঘুরে দেখে তখন দেখা যায় সেখানে তানজানিয়া এবং মায়ানমার থেকে আসা সেগুন কাঠের বিশাল সম্ভার মজুত ছিল।
কোম্পানির ডিরেক্টর সমীর জয়সওয়াল এবং পুনীত কোহলি স্বীকার করেছেন যে ৮০হাজার মেট্রিক টন সেগুন কাঠ সেখানে মজুত রয়েছে, যা তাদের বর্তমান স্টকের ৬০% বেশি, সেগুলি সবই মায়নামার থেকে আমদানি করা হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, এর জন্য মোটা অঙ্কের টাকা তাঁকে দিতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেশ কয়েক হাজার মেট্রিক টন সেগুন কাঠ ২০২১ সালের আগেই মায়নামার থেকে আনা হয়েছে। বেশ কিছু কোম্পানি (কমিলিগ্নো সহ) মায়নামারের সেগুনের অবৈধ আমদানির অভিযোগকে "ভিত্তিহীন" বলে দাবি করেছে। তবে এই সংস্থাগুলির মাধ্যমেই বিদেশের বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে বহুমূল্যের এই সেগুন কাঠ।
ইয়াঙ্গুনে সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সেগুন ব্যবসায়ীদের অবস্থা শোচনীয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক সময় দেশের 'শীর্ষ'উত্পাদনকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে ৬০-৭০ টি সেগুন কারখানা এবং করাতকল বন্ধ হয়ে গেছে। এক সেগুন কাঠ ব্যবসায়ী বলেন, “এখন বেশিরভাগ সেগুনকাঠ থার্ড পার্টির মাধ্যমে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বিদেশে রপ্তানি করছে এবং প্রচুর সেগুন রয়েছে যা অবৈধভাবে চিন ও ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে পাচার করা হচ্ছে। এই পাচার মূলত হয় নাগাল্যান্ড, মিজোরাম এবং অসম সীমান্তে"।