Katchatheevu island to Sri Lanka: শ্রীলঙ্কাকে বোকার মত কাচাথিভু দ্বীপ উপহার দেওয়ার অভিযোগে রবিবারও (৩১ মার্চ) কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ তিনি পোস্ট করেছেন, 'চোখ খুলছে, আর চমকে উঠতে হচ্ছে। নতুন তথ্যগুলো দেখাচ্ছে যে কীভাবে কংগ্রেস কাচাথিভু দ্বীপকে শ্রীলঙ্কার হাতে তুলে দিয়েছে। এই কাজ প্রত্যেক ভারতীয়কে ক্ষুব্ধ করেছে। জনগণ আজ ফের নিশ্চিত হয়েছে যে, আমরা কখনও কংগ্রেসকে বিশ্বাস করতে পারি না।'
- বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।
- বিজেপির তামিলনাড়ুর নেতাও সরব হয়েছেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
- এই বিতর্ক কয়েক শতাব্দী পুরোনো।
বিজেপির রাজনৈতিক ইস্যু, 'কাচাথিভু'
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের আগে তামিলনাড়ুতে বিজেপির প্রধান কে আন্নামালাই নথিপত্র দেখিয়ে অভিযোগ করেন যে, কংগ্রেস কখনও কাচাথিভুর মত ক্ষুদ্র এবং জনবসতিহীন দ্বীপের গুরুত্ব বুঝতেই পারেনি। এমনকী, সংবাদমাধ্যমের খবরেও বলা হয়েছে যে, 'জওহরলাল নেহরু একবার ওই দ্বীপের দাবি সম্পূর্ণভাবে ছেড়ে দিতে' দ্বিধা করবেন না বলে মন্তব্য করেছিলেন। এই বিতর্ক নতুন কিছু না। ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ভারত, ১৯৭৪ সালে কাচাথিভুর ওপর তার দাবি পরিত্যাগ করেছিল। সেটাকেই রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে বিজেপি।
'কাচাথিভু' দ্বীপ কোথায়?
কাচাথিভু হল ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যবর্তী পক প্রণালীতে একটি ২৮৫-একরের জনবসতিহীন দ্বীপ। এটি দৈর্ঘ্যে ১.৬ কিলোমিটারের বেশি নয়। আর প্রস্থে ৩০০ মিটার। এটি ভারতের উপকূল থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দূরে রামেশ্বরমের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। শ্রীলঙ্কার উত্তর প্রান্তে জাফনার প্রায় ৬২ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং শ্রীলঙ্কার জনবসতিপূর্ণ ডেলফ্ট দ্বীপ থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। দ্বীপের একমাত্র কাঠামো বলতে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকের একটি ক্যাথলিক গির্জা। যার নাম, 'সেন্ট অ্যান্থনি'স গির্জা। বার্ষিক উৎসবের সময়, ভারত ও শ্রীলঙ্কা উভয় রাষ্ট্র থেকেই খ্রিস্টান প্রাদ্রিরা এই উৎসবে অংশ নেন। দুই রাষ্ট্র থেকেই তীর্থযাত্রীরা সেখানে যান। ২০২৩ সালে ২,৫০০ ভারতীয় এই উৎসবে যোগ দিতে রামেশ্বরম থেকে কাচাথিভুতে গিয়েছিলেন। তবে, দ্বীপে কোনও পানীয় জলের উৎস না থাকায়, তা স্থায়ী বসতি স্থাপনের উপযুক্ত নয়।
আরও পড়ুন- একের পর এক জায়গায় তল্লাশি, বিপুল অর্থ উদ্ধার, টাকাগুলো কোথায় রাখছে ইডি?
কাচাথিভু দ্বীপের ইতিহাস
১৪ শতাব্দীর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের জেরে এই দ্বীপ তৈরি হয়েছে। ভূতাত্ত্বিক সময়কালের বিচারে কাচাথিভু অন্য অনেক দ্বীপের তুলনায় নতুন। মধ্যযুগের প্রথম দিকে, এটি শ্রীলঙ্কার জাফনা রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৭ শতকে, রামেশ্বরমের প্রায় ৫৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে রামনাথপুরমের রামনাদ জমিদারির অধীনে চলে যায় এই দ্বীপ। ব্রিটিশ রাজের আমলে এটি মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অংশ হয়ে ওঠে। কিন্তু, ১৯২১ সালে, তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশ ভারত এবং শ্রীলঙ্কা উভয়ই মাছ ধরার সীমানা নির্ধারণের জন্য কাচাথিভু দ্বীপের ওপর নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছিল। একটি সমীক্ষায় কাচাথিভুকে শ্রীলঙ্কার অংশ বলে দেখানো হয়েছিল। কিন্তু, ভারত থেকে যাওয়া ব্রিটিশ প্রতিনিধিদল রামনাদ রাজ্যের মালিকানার কথা উল্লেখ করে দ্বীপটির ওপর শ্রীলঙ্কার অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করে। এই বিরোধ ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত চলতেই থাকে।