ভারত সরকার গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের প্রকাশিত রিপোর্টকে ‘ভুল’ বলে অভিহিত করেছে। সরকার বলেছে যে রিপোর্টের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুতর পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে। শুক্রবার গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে দেখা গিয়েছে ১২১ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১০৭ নম্বরে। আর এই রিপোর্ট সামনে আসার পরই সরকারের তরফে রিপোর্টের পদ্ধতির ত্রুটিকে তুলে ধরে রিপোর্টটিকে ভুল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ২০২২-এ প্রকাশিত রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় ভারত সরকার বলেছে, 'সূচকটি ক্ষুধার একটি ভুল পরিমাপ, এতে অনেক ত্রুটি রয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারের তরফে বলা হয়েছে এই রিপোর্ট সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ। একই সঙ্গে প্রকাশিত এই রিপোর্টের নিন্দাও করা হয়েছে সরকারের তরফে। কেন্দ্র শনিবার বলেছে যে দেশের ভাবমূর্তিকে "খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা” পূরণ করতে ব্যর্থ একটি দেশ হিসাবে ভারতকে তুলে ধরা হয়েছে। যা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ। পাশাপাশি রিপোর্টটিকে ‘ভুল’ বলেও সরকারের তরফে উল্লেখ করা হয়।
গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের রিপোর্টে এক ধাক্কায় ৬ ধাপ নেমে ভারতের স্থান ১০৭। বিশ্বব্যাপী এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ক্ষুধার সূচক অনুযায়ী ভারত তার পড়শি দেশ নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশেরও পিছনে রয়েছে। তালিবান শাসনে থাকা আফগানিস্তান ছাড়া প্রতিবেশী সব দেশই বিশ্ব ক্ষুধার সূচকে ভারতের থেকে এগিয়ে রয়েছে। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স অনুযায়ী বিশ্বের ১২১টি দেশের মধ্যে গত বছর ভারত ১০১ নম্বর স্থানে ছিল।
গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স অনুযায়ী, ক্ষুধার সূচকে বিশ্বের ১২১টি দেশের মধ্যে ভারতের প্রতিবেশী দেশ নেপাল রয়েছে ৮১ নম্বর স্থানে, পাকিস্তান রয়েছে ৯৯ নম্বরে, শ্রীলঙ্কা ৬৪ নম্বরে এবং বাংলাদেশ রয়েছে ৮৪ নম্বরে। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স অনুযায়ী ভারত ক্ষুধার সূচকে ২৯.১ নম্বর পেয়েছে। ক্ষুধার সূচকের স্তর অনুযায়ী এটি ‘গুরুতর’ বিভাগের মধ্যে পড়েছে। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের স্কোর চারটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সেগুলি হল, অপুষ্টি, শিশুদের বৃদ্ধিতে বাধা, শিশু অপচয় ও শিশুদের মৃত্যুহার।
বিশ্ব ক্ষুধার সূচকে তালিকায় একেবারে শেষে রয়েছে ইয়েমেন। এশিয়ার মধ্যে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চিন ও কুয়েত। উল্লেখ্য, গত বছরে বিশ্বের মোট ১১৬টি দেশকে নিয়ে ক্ষুধার সূচক পরিমাপ করা হয়েছিল। গত বছর তালিকায় ১০১ নম্বর স্থানে ছিল ভারত। তবে এবার ভারত আরও নেমে গিয়েছে তালিকায়। এক্ষেত্রে করোনা অতিমারী একটি কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
এবছর এই সমীক্ষায় ১২১টি দেশকে নেওয়া হয়েছে। ভারত বিশ্ব ক্ষুধার সূচকে এবছর ১০৭ নম্বরে নেমে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারতের থেকে পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কাও ওপরের স্থানে রয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বিশ্ব ক্ষুধার সূচকে ভারতের পতন ২৮.১ থেকে ২৯.১ হারে ঘটেছে। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের মোট জনসংখ্যার ১৬.৩ শতাংশ জনগণ খিদের জ্বালা এবং অপুষ্টিতে ভুগছেন।
ভারতের ৩৫.৫ শতাংশ শিশু অপুষ্টির কারণে বয়সের তুলনায় বাড়েনি বলেও উল্লেখ রিপোর্টে। সব মিলিয়ে এবছর বিশ্ব ক্ষুধার সূচকে মোট ১২১টি দেশের তালিকায় প্রথম শীর্ষ স্থানগুলি দখলে রেখেছে চিন, তুরষ্ক, কুয়েতের মতো দেশগুলি।