Chennai Rain: দেশ থেকে বর্ষা বিদায় নিলেও বৃষ্টি দানবের হাত থেকে রেহাই নেই তামিলনাড়ুর। অবিরাম বৃষ্টির জেরে সেই রাজ্যের ইতিমধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ো হাওয়া থেকে বাঁচতে বৃহস্পতিবার দুপুর ১.১৫-সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে বিমানবন্দরে বিমান নামা, তবে উড়বে বিমান। এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বলেছে, যাত্রী সুরক্ষা এবং বিমানের ওঠানামা সহজ করতে এই সিদ্ধান্ত। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপের কারণেই এই দুর্যোগ। আগামি ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হবে উত্তর চেন্নাই, কুড্ডালুর, তিরুভালুরের মতো জেলা।
বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে এই নিম্নচাপ বলয় তামিলনাড়ু-অন্ধ্র প্রদেশ সীমান্ত দিয়ে স্থলভূমিতে প্রবেশ করবে। তারপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি। এমনটাই হাওয়া অফিস সূত্রে খবর। অবিরাম বৃষ্টিতে জলের তলায় চেন্নাইয়ের একাধিক রাস্তা। দুর্ঘটনা এড়াতে শহরের একাধিক রাস্তা এবং সাবওয়ে বন্ধ করেছে পুলিশ। বহু পথে ঘোরানো হয়েছে ট্রাফিক। রেল লাইন জলের তলায় থাকায় ব্যাহত লোকাল ট্রেন এবং দূরপাল্লার ট্রেন পরিষেবা।
তামিলনাড়ুর এই অবস্থায় রাজ্যবাসীকে সুস্থ এবং নিরাপদ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি। পাশাপাশি দুর্গতদের সাহায্যে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, গত সপ্তাহ থেকেই দুর্যোগের কবলে চেন্নাই। গত শনিবার রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল চেন্নাই। রাতভর একটানা বৃষ্টির জেরে শহর চেন্নাই এবং শহরতলির বেশিরভাগ এলাকায় জল জমে গিয়েছিল। সাইদাপেট, ভেলাচেরি, আদমবাক্কাম, মাদিপাক্কাম এবং পশ্চিম মাম্বালামের কিছু এলাকায় রাস্তায় ২-৩ ফুট পর্যন্ত জল জমে ছিল।পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আগামী সোম ও মঙ্গলবার চেন্নাইয়ের সব স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন।
এক রাতের বৃষ্টিতেই চেন্নাইয়ে কার্যত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। চেন্নাই এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রাতভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। রবিবার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এরপরেই চেন্নাই, চেঙ্গালপাট্টু, কাঞ্চিপুরম এবং তিরুভাল্লুর জেলার আশেপাশের স্কুল এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী দু’দিন বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা করেছিলেন তিনি।
রবিবার তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন, মুখ্যসচিব ভি ইরাই আনবু-সহ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে বেশ কয়েকটি জলমগ্ন এাকা পরিদর্শন করেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত জল বের করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে একটানা ভারী বৃষ্টির জেরে চেন্নাইয়ের তিনটি জলাধারের জলস্তরও বিপদসীমা ছুঁয়েছে।
এই বৃষ্টিতেও চেন্নাই শহরের বেশ কিছু সাবওয়েতেও কয়েক ফুট পর্যন্ত জল জমে গিয়েছে। শহর ও আশেপাশের বহু বাড়িতেও জল ঢুকে গিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় দুর্গত এলাকাগুলি থেকে মানুষজনকে অন্যত্র সরানোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জলমগ্ন এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ আপাতত বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের চারটি দল জলমগ্ন এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। দুর্গত এলাকা থেকে মানুষজনকে সরানোর কাজ করছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন