অনুমোদিত EWS ফ্যাকাল্টি পদ সহ ৩৫ টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সহ ৩১টি গত চার বছরে কোটার অধীনে একজনও সহযোগী অধ্যাপক বা অধ্যাপক নিয়োগ করতে পারেনি। এমনই তথ্য উঠে এসেছে RTI -এর মাধ্যমে।
অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর (EWS) জন্য সংরক্ষণ চালুর প্রায় চার বছর হয়ে গিয়েছে। কোটার অধীনে কেন্দ্রীয় ৩৫ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ৩১ টি গত চার বছরে একজনও সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক নিয়োগ করতে পারেনি।
১ জুলাই, ২০২৩ পর্যন্ত, অনুমোদিত অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর সংরক্ষণের আওতায় এই পদে অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক সহ নিয়োগের মানদণ্ড পুরণে ব্যর্থ হয়েছে ৩৫ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, হায়দ্রাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (HCU), এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় এবং পন্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রিমিয়ার প্রতিষ্ঠান সহ ৩১ টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর ফলে প্রায়অনুমোদিত ৩৮০ পদ এখনও খালি রয়ে গিয়েছে।
DoPT নির্দেশিকা অনুসারে, EWS বিভাগে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে একটি পদের জন্য একজন আবেদনকারীর মোট বার্ষিক পারিবারিক আয় ৮ লাখ টাকার কম বা সমান হতে হবে। ইউজিসি অনুসারে, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক স্তরে সরাসরি নিয়োগের জন্য যোগ্য হতে হলে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে আট বছর সহকারী অধ্যাপক হিসাবে কাজ করতে হবে। তবে, আট বছরের অভিজ্ঞতা সহ একজন সহকারী অধ্যাপকের বেতন বার্ষিক ৮ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এর ফলেই সৃষ্টি হয়েছে নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সমস্ত ২৮ টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছেছে। যেগুলি গত চার বছরে একজনও EWS- সংরক্ষণের অধীনে সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক নিয়োগ করতে পারেনি৷ ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে মেনে নেওয়া হয়েছে উপরোক্ত সমস্যার কারণে এই ধরনের পদ পূরণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণাকের কাছেও জানিয়েছেন।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর যোগেশ সিং- বলেন, “EWS কোটার অধীনে, পরিবারের মোট আয় বার্ষিক ৮ লক্ষ টাকা হওয়া উচিত, কিন্তু যখন একজন সহযোগী অধ্যাপক হন, তখন আয় ৮ লক্ষ টাকার বেশি। ফলে তারা আবেদনের অযোগ্য হয়ে পড়ছেন। আমি মনে করি সরকারও এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে এবং আশা করি ভবিষ্যতে এই বিষয়ে একটি সংশোধনী আসতে পারে, তবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই কোটার অধীনে নিয়োগ করা সম্ভব নয়।" দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে এই কোটার অধীনে ২৬টি অধ্যাপক পদ অনুমোদিত হয়েছে এবং সহযোগী অধ্যাপকের স্তরে ৬৪টি EWS পদ রয়েছে।
আরেকটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান, এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের EWS কোটার অধীনে ২৭ টি শূন্যপদে নিয়োগ সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ সেলের প্রধান অধ্যাপক ধনঞ্জয় যাদব বলেন, “EWS (নিয়োগ) সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পরেও আমরা সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছিলাম। নিয়োগ সংক্রান্ত যে বিধি রয়েছে সেই মোতাবেক কীভাবে যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাওয়া সম্ভব? বিশ্ববিদ্যালয় EWS বিভাগের অধীনে সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক পদের জন্য কোনও যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পায়নি। তিনি আরও বলেন, "প্রতিটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় একই সমস্যায় ভুগছে," ।
শিক্ষা মন্ত্রকের কাছে সমস্যা সংক্রান্ত প্রশ্ন ইমেল মারফত করা হলেও সে সম্পর্কে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষা মন্ত্রকের একজন আধিকারিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন যে মন্ত্রক এই বিষয়ে তাদের মন্তব্য চেয়ে ডিওপিটি-কে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। ৩৫ টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে, চারটি — ছত্তিসগড়ের গুরু ঘাসীদাস বিশ্ববিদ্যালয় (GGV), কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়, মহাত্মা গান্ধী অন্তঃরাষ্ট্রীয় হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (BHU) — সহযোগী ও অধ্যাপকের স্তরে কিছু EWS ক্যাটাগরিতে শূন্য পদ পূরণ করতে পেরেছে।
বিইউ প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা, যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন, বলেছিলেন যে বিশ্ববিদ্যালয়টি সহযোগী অধ্যাপক স্তরে দুইজন যোগ্য প্রার্থীকে খুঁজে পেয়েছে কারণ তারা তাদের পূর্ববর্তী চাকরিতে অ্যাডহক বা চুক্তিভিত্তিক পদে কর্মরত ছিল এবং তারা EWS আয়ের মানদণ্ড পূরণ করেছিল। বিএইচইউ কর্মকর্তা বলেছেন, “অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে একজন প্রার্থীর ন্যূনতম ৮ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই অভিজ্ঞতা যেকোন রূপে হতে পারে, তা হতে পারে পূর্ণকালীন চুক্তিভিত্তিক। নিম্ন আয়ের অ্যাডহক ও চুক্তিভিত্তিক অধ্যাপকদের এসব পদে নিয়োগ করা হয়েছে। দুই প্রার্থীর নিয়োগের ক্ষেত্রে, বিএইচইউ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সমস্ত নিয়ম ও নিয়ম অনুসরণ করেছে ”।