নাগপুরে জি২০-র সভা উপলক্ষে রাস্তা থেকে ভিখারি ও গৃহহীনদের সরাতে শুরু করল পুলিশ। বিদেশি রাষ্ট্র্রপ্রধানদের কাছে যাতে ভারতের দুর্দশা ধরা না-পরে যায়, সেই জন্য এই ব্যবস্থা। এর আগে ট্রাম্পের সফরকালে এই ভাবেই রাস্তার আশপাশ ঢেকে দুর্দশা লুকোনোর চেষ্টা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ফের জি২০ বৈঠক উপলক্ষে একইরকম দৃশ্য এবার নাগপুরে দেখা যাচ্ছে।
ওই ভিখারি এবং গৃহহীনদের আপাতত দু'মাস অন্যত্র থাকতে বলে দিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা। এইভাবে পথঘাট থেকে ভিখারি এবং গৃহহীনদের উচ্ছেদ হতে দেখে অনেকে আবার এর সঙ্গে হীরক রাজার দেশের কাহিনির মিল খুঁজে পেয়েছেন। কারণ সেই কাহিনিতেও বিদেশি রাজাদের থেকে রাজ্যের দুর্দশা লুকোতে এইভাবেই পথঘাট থেকে ভিখারি, গৃহহীনদের উচ্ছেদ করেছিলেন হীরক রাজ।
এর মধ্যেই নাগপুরে জি২০ সভার আগে, একটি সার্কুলার জারি করেছে প্রশাসন। সেই সার্কুলার বা নির্দেশনামা অনুযায়ী 'ভিক্ষুক এবং এই জাতীয় অন্যান্য লোকদের' ট্রাফিক মোড় বা চৌক-এ জড় হওয়া কিংবা অর্থ চাওয়া নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। পুলিশ এবং প্রশাসন গৃহহীনরা যে রাস্তায় থাকেন, সেই সব রাস্তা পরিষ্কার করতে শুরু করেছে।
অনথিভুক্ত বা ভবঘুরে এবং যাযাবর সম্প্রদায়ের মানুষদের শহরের সীমানা ছেড়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, বিভিন্ন অধিকারবাদী সংগঠন প্রশাসনের এই সব পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে। প্রশাসনের এই সব সিদ্ধান্ত সমাজের দুর্বল এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের গায়ে অপরাধীর তকমা সেঁটে দেয় বলে ওই সব সংগঠনের অভিযোগ।
আরও পড়ুন- ভারত সম্পর্কে জানতে অনলাইন কোর্সে অংশ নিচ্ছে তালিবান! চাঞ্চল্যকর তথ্য বিদেশ মন্ত্রকের
তবে, ওই সব সংগঠনের প্রতিবাদকে আমল না-দিয়ে ৮ মার্চ নাগপুর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিজেকে 'ভিক্ষুক হিসেবে জাহির করা' এবং 'অনুমোদনহীনভাবে ফুটপাথ, ট্র্যাফিক আইল্যান্ড এবং ডিভাইডার'-এ বসে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে যোগ করা হয়েছে যে আইপিসির ধারা ১৮৮ (সরকারি কর্মচারী দ্বারা যথাযথভাবে প্রবর্তিত আদেশের অবাধ্যতা) এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক ধারাগুলোর অধীনে ভিক্ষুক এবং অনুমোদনহীন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, এই আদেশটি ৯ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে কার্যকর হবে, যদি না, তা আগে প্রত্যাহার করা হয়।