করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতা পুলিশে তিনবার বিক্ষোভ সামনে এসেছে। শুক্রবার সল্টলেকে কলকাতা আর্মড পুলিশের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নের হেডকোয়াটার্সে উত্তেজনা ছড়ায়। এরপর শনিবার পুলিশকর্মীদের দাবি নিয়ে পথে নামল দলিত ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন পরিষদ। এদিন সংগঠনের সদস্যরা সল্টলেক সেক্টর ওয়ানে সশস্ত্র বাহিনীর দফতরের সামনে নীরব প্রতিবাদ জানায়। এদিকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর টুইটে কলকাতা পুলিশে ক্রমাগত বিক্ষোভ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি টুইটে লিখেছেন, "আমি খুবই চিন্তিত। প্রথমে কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুল, তারপর গরফা থানা এবং সর্বশেষ বিধাননগর কলকাতা পুলিশের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নের ঘটনা আমায় স্তম্ভিত করেছে। উর্দিধারীদের এই ধরনের আচরণ খুবই চিন্তাজনক। এতে কলকাতা পুলিশের মহান ঐতিহ্যে আঘাত লাগছে।" মমতা সরকারকে তাঁর পরামর্শ, "সার্বিকভাবে ওঁদের ক্ষোভ প্রশমন করার জন্য যথাযোগ্য ন্যায্য পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রশাসনকে স্বচ্ছ ও দায়িত্ববোধ সম্পন্ন রাখতে আমলাতন্ত্র এবং পুলিশকে রাজনীতি মুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে।"
করোনা মোকাবিলায় পুলিশকে একাধিক কাজ করতে হচ্ছে। এদিকে পুলিশ কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের প্রতি অবহেলা করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের মাস্ক, পিপিই, হ্যান্ড গ্লাভস পর্যাপ্ত পরিমানে মিলছে না। ইতিমধ্যে একাধিক পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শুক্রবার সল্টলেকে কলকাতা সশস্ত্র পুলিশের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নের হেডকোয়াটার্সে এক পুলিশ কর্মীর কোভিড ১৯ পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনেন। সূত্রের খবর, শুক্রবারের ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি এক উচ্চপদস্থ আধিকারিককে বদলি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
দলিত ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন পরিষদের সহভাপতি প্রসেনজিত বোস বলেন, "লকডাউনের সময়ে নাগরিক সমাজকে নিরাপিত্তা দিচ্ছে পুলিশ। অথচ তাঁদের মাস্ক, গ্লাভস নেই। তাঁদের আবাসন থেকে থানা স্যানিটাইজেশন করা দরকার। আক্রান্ত পুলিশ কর্মীদের সঠিক চিকিৎসা, সঠিক সময়ে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো নিয়ে বৈষম্য দেখা যাচ্ছে। করোনা লড়াইয়ের প্রথম শ্রেণির যোদ্ধারা উদাসীনতার শিকার হচ্ছেন। টানা ডিউটি করে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন। তাঁদের সবেতন ছুটি দিতে হবে।" এই সংগঠনের প্রশ্ন, "তাহলে করোনা লড়াইতে রাজ্য জিতবে কী করে?"