দেশের করোনার সাম্প্রতিক সংক্রমণ সুনামির মতো। এই আশঙ্কা প্রকাশ করে সংক্রমণ প্রতিরোধে ফের একবার কেন্দ্রের পরিকল্পনা জানতে চাইল দিল্লি হাইকোর্ট। মে’র দ্বিতীয় সপ্তাহে শীর্ষে উঠবে সংক্রমণ গ্রাফ।আপনারা কতটা তৈরি? ঠিক এই প্রশ্নই করেছে হাইকোর্ট।
এদিনের শুনানিতে আদালতে বলেছে, ‘আমাদের দেশে করোনার গ্রাফ শিখর ছোঁবে মে’র দ্বিতীয় সপ্তাহে। তখন সংক্রমণের সুনামি হবে। কিছু মানুষ মারা যাবে। কিন্তু যাঁদের বাঁচার সম্ভাবনা, তাঁদের নিয়ে কী ভাবনা কেন্দ্রের? নয়তো সেসব মানুষদেরও আমরা হারাব।‘
এদিকে, চলতি সপ্তাহে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া করোনার অব্যর্থ ওষুধ ভিরাফিন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। জাইডাস ক্যাডিলার এই ওষুধ ব্যবহারে সংক্রমিত প্রায় ৯১% রোগী একসপ্তাহের মধ্যে নেগেটিভ হয়ে উঠছেন।
এমনকি, সংক্রমিতের দেহে অক্সিজেনের তারতম্য রোধে কার্যকরী এই ভিরাফিন। এদিকে, করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যু বৃদ্ধি দেশে চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণ। শনিবার রেকর্ড তৈরি হল দেশে। দৈনিক মৃত্যুও আড়াই হাজার ছাড়াল এই প্রথমবার।কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭৮৬ জন।গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যায় নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। শনিবার ২ হাজার ৬২৪ মৃত্যু হওয়ায় দেশে এখনও অবধি প্রাণ হারালেন ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৪৪ জন।
করোনা অতিমারীতে দৈনিক সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন নজির তৈরি হল রাজধানী দিল্লিতেও। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে মারা গিয়েছেন ৩৪৮ জন। দেশে বর্তমানে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ২৫ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৪০ জন। এখনও পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৬৬ লক্ষ ১০ হাজার ৪৮১।
এদিকে, একটি মার্কিন গবেষণায় বলা হয়েছে যে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে করোনায় ভারতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি হতে পারে। অন্যদিকে,মে মাসের মাঝামাঝি দেশে দৈনিক সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। দিনে ৩৩-৩৫ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হবেন সেই সময়, এমনটাই আশঙ্কা আইআইটি-র বিজ্ঞানীদের।
দেশের করোনা চিত্রের এই ছবি মাত্র একটি অংশ। করোনা ঝড়ে দিশেহারা আক্রান্তের পরিবার। অক্সিজেনের আকালে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা অসম্ভব, অন্যদিকে হাসপাতালে ‘নো বেড’। দেশের কোভিড পরিসংখ্যান বলছে অক্সিজেন চাহিদা আর মৃত্যু হার প্রায় সমানে পৌঁছেছে। শ্বাস নেওয়ার শ্বাসটুকু পাওয়ার হাহাকার ভারতে।