Advertisment

করোনা আবহে সম্মান জানাতে সশব্দে ভারতবাসী

চোখে জল নিয়ে বয়স্ক মহিলা বললেন, জোরাল শব্দের তরঙ্গ নেতিবাচক শক্তিকে অচল করে দেয়। অতীতেও নাকি এমনটাই হত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ছবি: শশী ঘোষ

ঘড়িতে কাঁটায় কাঁটায় পাঁচটা, হঠাত্ সরব হয়ে উঠল গোটা কলকাতা। বাজছে শঙ্খ, কাঁসর ঘণ্টা, সঙ্গে করতালি। বারান্দায় দাঁড়িয়ে থালা বাজাচ্ছেন প্রবীণা, তাঁর চোখ দিয়ে ঝরছে জল। কিন্তু কেন? ক্ষণিকের মধ্যে যেন মনে হল বিপদ সংকেত বেজেছে, যেন বলছে, তৈরি হও। কাঁসর ঘন্টা বাজানোর ভঙ্গিমা ও শঙ্খতে ফু দেওয়ার জোর দেখে মনে হল শত্রুপক্ষ সামনে। ভয় পেও না। প্রস্তুত থাকো। পাশে আছি।

Advertisment

ফোনের নোটিফিকেশন বলছে কলকাতা নয়, গোটা দেশ এতে শামিল হয়েছে। একের পর এক ফেসবুক লাইভ। যেখানে দেখা যাচ্ছে, অ্যাপার্টমেন্টের বারান্দায় বা জানালায় দাঁড়িয়ে মানুষ চোয়াল শক্ত করে হাততালি দিচ্ছে, শব্দ করছে।

কিন্তু কেন? পোশাকী কারণ, প্রধানমন্ত্রী মোদীর বেঁধে দেওয়া গতে করোনা পরিস্থিতিতে যাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন, সেই স্বাস্থ্য় ও সাফাইকর্মীদের সম্মান জ্ঞাপন। কিন্তু এদিনের সশব্দ আবেগ বলছিল আরও অনেক কথা। চোখে জল নিয়ে বয়স্ক মহিলা বললেন, জোরাল শব্দের তরঙ্গ নেতিবাচক শক্তিকে অচল করে দেয়। অতীতেও নাকি এমনটাই হত।

পুনের বাসিন্দা অঙ্কিতা ব্যানার্জি বলেন, "সকাল থেকে মনে হচ্ছিল কোনো ভুতুড়ে এলাকায় বসবাস করছি। মনে হচ্ছিল,কী স্বার্থপর আমরা। ডাক্তার, পুলিশ, মিডিয়া লড়ছে, আর আমরা ঘরে ওয়েব সিরিজে মেতেছি। কিন্তু পাঁচটা বাজতেই আমার মনে হল, না আমরা একত্রিত হয়ে লড়াই করছি। সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক"।

প্রশাসনের জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী কর্মী দেবাশিষ মিত্র বলেন, " দিনের শেষে বাড়তি অক্সিজেন উপহার পেলাম শহরবাসীর থেকে"।

আরও পড়ুন: কলকাতায় করোনার শিকার আরও ৩, উৎস দ্বিতীয় আক্রান্ত তরুণ

বরানগরের বাসিন্দা রুপালি ঘোষ শঙ্খ হাত থেকে নামিয়ে বলেন, "কে বলবে কিছুদিন আগে পর্যন্ত এনআরসি সিএএ নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি, মারপিট, গোলাগুলি চলেছে এই দেশে। আর আজ সোশাল মিডিয়ায় সামান্য কিছু হ্যাশট্যাগের ডাকে একত্রিত হয়ে সবাই সম্মান জানাল তাঁদের, যাঁরা করোনা ভাইরাসের গ্রাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আজ কোনো কাগজ দেখল না কেউ। আতঙ্কিত আবহে দিনের শেষে অনেকটা প্রাপ্তি। ভয় পেও না। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ডাক্তারদের কথা শুনে এগিয়ে চলো"।

coronavirus corona
Advertisment