লকডাউনে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে 'শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেন চালাচ্ছে কেন্দ্র। তবে ওই ট্রেনের টিকিটের দাম পরিযাদেরই মেটাতে হবে, তাঁরা না পারলে ওই ভাড় দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারকে। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই বিতর্ক দানা বাঁধে। এরই মাঝে বড় ঘোষণা করলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে রেল ভাড়া জোগাবে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দলটি। সোমবার এক বিবৃতিতে কেন্দ্রকে বিঁধে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন কংগ্রসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী। তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনের শুরুতেই দেশজুড়ে করোনা সংক্রমিত ৪২,৫৩৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ২,২৭০ জনের শরীরে জীবাণুর হদিশ মিলেছে। অ্যাকটিভ কেস ২৯,৪৫৩। তবে, ১১,৭০৬ জন সুস্থ হয়ে ওঠায় আশার আলো দেখছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ভারতে এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১,৩৭৩ জনের।
তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনে বাংলায় কোথায় কী ধরনের গতিবিধিতে ছাড় মিলবে, তা নির্ধারণে আজ বৈঠকে বসছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্স এই ছাড়ের বিষয়টি স্থির করবে। রাজস্বের কথা বিবেচনা করে মদের দোকান খোলায় রাজ্য সরকার ছাড় দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
পৃথিবীব্যাপী করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সোমবার ৩.৫ মিলিয়ান ছাড়িয়েছে। বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও। আমেরিকার অবস্থা ভয়াবহ।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
Live Blog
Coronavirus Lockdown Situation In India-West Bengal Kolkata Updates. করোনা লকডাউন পরিস্থিতির সব খবর জানতে চোখ রাখুন এখানে...
পরিযায়ী শ্রমিক এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আটকে থাকা বাংলার মানুষরা সোমবারই বিশেষ ট্রেনে করে রওনা দিচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। তাঁদের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা, রয়েছেন ছাত্র, তীর্থযাত্রীরাও। এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনার প্রভাবে সামাজিক ও আর্থিক অবস্থা উথাল-পাতাল হয়ে গিয়েছে। এবার করোনা মোকাবিলায় নানা বিষয়ে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে চিঠি দিল রাজ্য় বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। চিঠিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে লকডাউন কার্যকর করতে কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী চেয়ে পাঠান। মেডিক্য়াল, নার্সিং, আশা ও এএনএম কর্মীসহ সমস্ত স্বাস্থ্য় কর্মীদের আগামী ছমাস দ্বিগুন সাম্মানিক ও বেতন প্রদানের দাবিও জানানো হয়েছে এই পত্রে। এঁদের কেন্দ্রের ৫০ লক্ষ টাকার বীমার অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া আগামী তিন মাস দরিদ্র পরিবার পিছু ১হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান। আগামী ৬ মাস বিনা খরচে রেশন প্রদান। দিলীপ ঘোষের প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষকদের বিভিন্ন প্রকল্প চালু করার। পিএম কিষান নিধি প্রকল্প চালু হলে রাজ্য়ে ৪২০০ কোটি টাকা আসবে। ৭০ লক্ষ কৃষক উপকৃত হবে। কৃষক বন্ধু প্রকল্পের মাধ্য়মে ২৭১৪ কোটি টাকা বাঁচাবে রাজ্য়ের। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বরাদ্দ ৪১৭.৬ কোটি টাকা বাঁচবে স্বাস্থ্য় সাথী প্রকল্পে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আটকে থাকা উত্তর-পূর্বের পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন, কেন্দ্রকে সোমবার এই আর্জিই জানাল মিজোরাম বিজেপি। মিজোরাম বিজেপির সভাপতি ভানলালমুয়াকা বলেন, "যেভাবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে, তেমনই উত্তর-পূর্বের মানুষদের জন্যও যাতে ব্যবস্থা করা হয় সে জন্য আমরা রেলমন্ত্রী পীযুষ গোয়েলকে অনুরোধ করেছি..."।
তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনে মদের দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। এছাড়াও গ্রিন ও অরেঞ্জ জোনে আরও বেশকিছু ক্ষেত্রে ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্যগুলির রাজস্বের কথা বিবেচনা করেই এই ছাড়ের সিদ্ধান্ত। সোমবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন শহরে মদের দোকানের সামনে দীর্ঘ লাইন নজরে আসে।
প্রথাম পর্যায়ের লকডাউনের শেষে পাট কল চালুতে সম্মতি দেয় কেন্দ্র। রাজ্যের ১৮ পাট কলে কাজ চালুর করার জন্য রাজ্যকে আর্জি জানায় মোদী সরকার। খাদ্য শস্য মজুত করতে পাটের থলি প্রয়োজন। সেই উদ্দেশ্য পূরণের জন্যই নির্দেশ দিয়েওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় নির্দেশ মোতাবেক মমতা সরকারও এ রাজ্যের পাট কল চালু করতে অনুমতি দেয়। বলা হয়, পাট কলগুলি মাত্র ১৫ শতাংশ স্রমিক নিয়ে কাজ করবে। পারস্পরিত দূরত্ব বজায় রাখা সহ অন্যান্য নিয়ম-বিধি মানতে হবে।
এই নিয়ম-বিধি ঘিরেই সমস্য়ার শুরু। উৎপাদনের ইচ্ছে থাকলেও বাস্তবে তা সম্ভব নয় বলে মত অধিকাংশ পাট কল কর্তৃপক্ষের। তাঁদের মতে, বেশিরভাগ পাট কলই রেড জোনের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, শ্রমমির্ভর এই শিল্পে মাত্র ১৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে উৎপাদন সম্ভব নয়। পারস্পরিক দূরত্বের নিয়মও মানা যাবে না। ফলে লকডাউন মিটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুসারে লকডাউনের জেরে প্রায় ২ লক্ষ টন উৎপাদন ব্যবত হতে পারে।
বাংলায় মোট ৫২ পাট কল রয়েছে। এর মধ্যে নানা কারণে ৬টি বন্ধ। চালু থাকা ৪৬টির মদ্যে ১৮টি পাট কল উত্তর ২৪ পরগনার অন্তর্গত। প্রায় ২ লক্ষ শ্রমিক এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত।
কাশ্মীর থেকে পাঞ্জাবে পড়তে এসেছিলেন বহু পড়ুয়া। লকডাউনের জেরে তাঁরা আটকে পড়েছিলেন। সোমবার সকালে নিজেদের রাজ্যে ফেরার অপেক্ষায় কাশ্মীরি পড়ুয়ার দল।
তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনে বাংলায় কোথায় কী ধরনের গতিবিধিতে ছাড় মিলবে, তা নির্ধারণে আজ বৈঠকে বসছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্স এই ছাড়ের বিষয়টি স্থির করবে। জানা গিয়েছে যে, বর্ধিত লকডাউনের কেন্দ্রীয় গাইডলাইন বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
রাজ্য সচিবালয়ের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘লকডাউনের এই পর্যায়ে কোন জোনে কী দোকান খুলবে, কোন পরিষেবা চালু থাকবে এবং শিল্পের কোন ক্ষেত্রগুলিতে উৎপাদন শুরু হবে তা মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন কমিটি আলোচনার মাধ্যমে আজ স্থির করবে। এদিনই বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে।’
পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের ভাড়া দেবে কংগ্রেস। সব রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনের ভাড় মেটাবে। রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে ইতিমধ্যেই নির্দেশ কার্যকর করার কথা জানিয়েছেন দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। চিঠিতে উল্লেখ, 'দেশবাসীর সেবায় ও তাঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একাত্ম থাকতে এটাই হবে কংগ্রেসের তরফে বিনীত সাহায্য।'
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের জন্য মোদী সরকারকে এদিন তোপ দাগেন সোনিয়া গান্ধী।
ভিন্ রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিক সহ অন্যান্যদের ফেরাতে ভাড়া নেওয়া হবে। তাতে স্লিপার ক্লাসের ভাড়ার সঙ্গে যোগ হবে আরও ৫০ টাকা। ৩০ টাকা সুপার ফাস্ট চার্জ এবং ২০ টাকা অন্যান্য চার্জ। যাত্রীদেরও এই ভাড় দিতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি যাত্রীদের ভাড়া মিটিয়ে দিতে পারে বলে গাইডলাইন প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার। রেলমন্ত্রকের তরফে বলা হয়,দীর্ঘ দূরত্বে যে ট্রেনগুলি যাবে তাতে যাত্রীদের খাবার এবং পানীয় জল দেওয়া হবে।
এরপরই মোদী সরকারের সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। সরব হয় কংগ্রেস।
তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনের শুরুতেই দেশজুড়ে করোনা সংক্রমিত ৪২,৫৩৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ২,২৭০ জনের শরীরে জীবাণুর হদিশ মিলেছে। অ্যাকটিভ কেস ২৯,৪৫৩। তবে, ১১,৭০৬ জন সুস্থ হয়ে ওঠায় আশার আলো দেখছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ভারতে এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১,৩৭৩ জনের।