পৃথিবীজুড়ে মহামারির আকার নিয়েছে করোনাভাইরাস। ছড়িয়ে পড়া করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় তৎপর ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি একযোগে কীভাবে মারণ জীবাণুর মোকাবিলা করবে তা নির্ধারণেই রবিবার বিকেল পাঁচটায় জরুরি বৈঠকে বসে সব দেশ। ভিডিও কনফারেন্সে শুরু হয় এই বৈঠক। আলোচনার শুরুতেই সার্কগোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির উদ্দেশে মোদী বলেন, "আমাদের সমস্যা একসূত্রে বাঁধা। তাই আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।" এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমরা ইতিমধ্যেই ভাইরাস প্রতিরোধে সব ব্যবস্থা নিয়েছি। সকলকেই সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু আতঙ্কিত হবেন না।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তান এই বৈঠকে অংশ নেবে বলে আগেই জানিয়েছিল ইসলামাবাদ। সেদেশের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র অশিয়া ফারুকি জানিয়েছেন, 'বৈঠকে অংশ নেবেন পাক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা তথা মন্ত্রী জাফর মির্জা।' ইতিমধ্যেই ভারতে করোনা আক্রান্ত সংখ্যা ১০৭টি। রবিবার ১২টি নতুন আক্রান্তের খবর এসেছে মহারাষ্ট্র থেকে।
আরও পড়ুন: কোয়ারেন্টাইন থেকে পালিয়ে বিমানে করোনা আক্রান্ত! হুলুস্থুল বিমানবন্দরে
গত শুক্রবারই সার্কের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি জানিয়ে একটি টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ”সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার কথা ভেবে সার্কভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সার্কভুক্ত ৮’টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডাকা হবে। ক্রমশ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মারণ এই ভাইরাসের মোকাবিলায় সবদেশের সঙ্গে আমরা একজোট হয়ে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।”
আরও পড়ুন: আপনি করোনা আক্রান্ত কিনা কীভাবে বুঝবেন? উপসর্গ মিললে কোথায় যাবেন?
ভারতে ক্রমশ বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দেশে করোনা আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৭। ইতিমধ্যেই ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্র, জয়পুর, উত্তরপ্রদেশ, কেরালা ও দিল্লিতে নতুন করে মারণ ভাইরাসে আক্রান্তের খবর মিলেছে। বর্তমানে মহারাষ্ট্র করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি (৩২)। এরপরেই রয়েছে কেরালা। শনিবারই ভারতের করোনা পরিস্থিতিকে 'নোটিফায়েড ডিজাস্টার' বলে ঘোষণা করেছে। একইসঙ্গে করোনায় মৃতদের পরিবারপিছু ৪ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত সবথেকে বেশি। এ দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪। এরপরই রয়েছে পাকিস্তান। শনিবার পর্যন্ত সে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০। মালদ্বীপে আক্রান্তের সংখ্যা ৮, আফগানিস্তানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭, বাংলাদেশে করোনা রোগীর সংখ্যা ৩, শ্রীলঙ্কায় আক্রান্তের সংখ্যা ২, নেপাল ও ভুটানে আক্রান্তের সংখ্যা ১।
সার্ক-এর মতই করোনা নিয়ে সোমবার বৈঠক করতে পারে জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলো।
ভারতে করোনা মোকাবিলায়, গত বুধবার থেকে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত ভিসা স্থগিতের নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। একমাসের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল সীমান্তও। বিমান ও স্থলবন্দরে জারি রয়েছে স্ত্রিনিং-এর ব্যবস্থা। এছাড়া, অধিকাংশ রাজ্যেই জমায়েত এড়াতে স্কুল কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাতেই একই পদক্ষেপ করা হয়েছে। দেশের সব স্পোটিং ইভেন্ট বন্ধ করা রয়েছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন