'সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রবিন্দু পাকিস্তান', প্রতিবেশীকে আক্রমণে বহুবার এই শব্দগুচ্ছই ব্যবহার করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। পাকিস্তান সম্পর্কে আরও কড়া শব্দ প্রয়োগ করা যায় বলে মনে করেন জয়শংকর। যে দেশ সন্ত্রাসবাদে ক্রমাগত মদত দিয়ে চলে, সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয়দাতা তাদের রেয়াত করতে রাজি নন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। বিশ্বের সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন জয়শংকর।
অস্ট্রিয়ার জাতীয় সংবাদমাধ্যম 'ওআরএফ'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানকে আক্রমণ শানান জয়শংকর। পাশাপাশি জয়শংকরের নিশানা করেছিলেন ইউরোপীয় দেশগুলিকেও। তাঁর অভিযোগ, পাকিস্তানের সীমান্ত সন্ত্রাসবাদী হামলার বিষয়গুলি নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলি নিন্দা জানায় না।
বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের কথায়, 'শুধুমাত্র কূটনৈতিক বলেই যে একজন ব্যক্তি মিথ্যাচারী হবেন, এমনটা নয়। কেন্দ্রবিন্দুর বদলে আমি আরও কঠোর শব্দ প্রয়োগ করতে পারি (পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ মদতের বিরোধীতায়)। আমাকে বিশ্বাস করুন, আমাদের সঙ্গে যা হচ্ছে তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রবিন্দু শব্দটি নিছকই কূটনৈতিক।'
ভারতে পাকিস্তানের জঙ্গি কার্যকলাপ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেন, 'একটা দেশ ছিল যারা কয়েকবছর আগে আমাদের সংসদ ভবনে হামলা চালিয়েছিল। সেই দেশই আবার মুম্বই শহরেও হামলা চালিয়েছিল। সেখানে হোটেলে থাকা বিদেশিদের নিশানা করা হয়েছিল। এই দেশ প্রতিনিয়ত সীমান্তপার জঙ্গি পাঠিয়ে যায়।'
বিদেশমন্ত্রীর প্রশ্ন, 'যেখানে শহরে দিনের আলোয় জঙ্গি নিয়োগ চলছে, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন হয়, বিশেষ করে যখন জঙ্গিদের সেনা কমব্যাট পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, সেখানে আপনি কী বলতে পারেন যে পাকিস্তানের সরকার এই সবের বিষয়ে কিছুই জানে না। কীভাবে পাকিস্তান এই বিষয়গুলি নিয়ে চুপ থাকে?'
এস জয়শংকরের অভিযোগ, ইউরোপীয় দেশগুলি সন্ত্রাসবাদের এই নীতির বিরোধিতা বা সমালোচনা করে না। সাংবাদিকরা বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরকে প্রশ্ন করেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ নিয়ে গোটা বিশ্বই চিন্তিত। এই যুদ্ধ কী বাস্তবে হতে পারে? জবাবে জয়শংকর বলেন, 'আমার মনে হয় বিশ্বের সন্ত্রাসবাদ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া প্রোয়োজন। তবে দুবৃনিয়া অনেক সময়ই এই সন্ত্রাসবাদের বিষয়টিতে তেমন নজর দেয় না। বিশ্বের অনেক দেশই ভাবে যে, এটা তো আমার সমস্যা নয়।'
এরপর জয়শংকর বলেন, 'যেহেতু সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রবিন্দু (পাকিস্তান) ভারতের খুব কাছে অবস্থিত, তাই স্বভাবতই আমাদের অভিজ্ঞতা অন্যদের জন্য কার্যকর হতে পারে।' ভারত বারেবারেই পাকিস্তানের উদ্দেশ্য বলেছে যে, সন্ত্রাসবাদে মদত ও শান্তি আলোচনা একযোগে চলতে পারে না। ভারতের বিরুদ্ধে সক্রিয় পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে প্রকৃতই ইসলামাবাদ পদক্ষেপ করলে তবেই দ্বিপাক্ষিক শান্তি আলোচনা সম্ভব বলে মনে করে দিল্লি।