কলেজিয়াম ব্যবস্থার সুপারিশ উপেক্ষা করার জন্য কেন্দ্রকে কড়া তিরস্কার করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলেছেন, এটি একটি আইন এবং এটি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। অ্যাটর্নি জেনারেলকে কড়া নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি কৌল বলেন, আপনি গিয়ে সরকারকে বুঝিয়ে বলুন। সংসদের প্রণীত আইন কিছু মানুষ মানতে নারাজ হলে কী অবস্থা হবে, সংসদে প্রণীত আইন মেনে চলতে হবে। অন্যথায় বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজিয়াম সিস্টেমকে মেনে চলতে হবে। তাকেই মান্যতা দিতে হবে। কলেজিয়াম সিস্টেমের বিরুদ্ধে বক্তব্য পেশ কোন সঠিক কাজ নয়। বিচারপতি সঞ্জয় কৌল সতর্ক করে বলেছেন, যদি সমাজের সকলে মিলে বলতে শুরু করেন যে, কোন আইনটা মানা হবে আর কোনটা মানা হবে না তাহলে বিচারব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে। আইন সকলের জন্য 'বাধ্যতামূলক' এবং কলেজিয়াম পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা সঠিক কাজ নয়।
সুপ্রিম কোর্ট আদালতে বিচারপতি নিয়োগের জন্য কলেজিয়ামের পাঠানো নাম অনুমোদনে কেন্দ্রের ঢিলেমি সংক্রান্ত একটি বিষয়ে শুনানি চলাকালীন এই মন্তব্য করেন। বিচারপতি এস কে কৌলের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ বলেছে, যে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম নিয়ে সরকারের তরফে নানান মন্তব্য করা হচ্ছে যেটা একেবারেই উপযুক্ত নয়।
তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানিকে এই বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দিতে বলেছিলেন। কলেজিয়াম ব্যবস্থা সুপ্রিম কোর্ট এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে বিতর্কের একটি বিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানিকে প্রশ্ন করেন, পার্লামেন্টে যে আইন তৈরি করা হয়েছে তাকে সমাজের একাংশ মানতে চাইছেন না। তাহলে আদালত কী এই আইন প্রয়োগ কে বন্ধ করে দেবে?
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। বেঞ্চ বলেছে আদালত আশা করে যে অ্যাটর্নি জেনারেল সরকারকে পরামর্শ দেবেন, যাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারা নির্ধারিত আইনি নীতিগুলি অনুসরণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, “যতদিন কলেজিয়াম ব্যবস্থা আছে, যতদিন থাকবে, ততদিন আমাদের তা কার্যকর করতে হবে। আপনি অন্য আইন আনতে চান, অন্য আইন আনতে কেউ আপনাকে বাধা দিচ্ছে না।"
অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, অন্তত দুটি ক্ষেত্রে নজির রয়েছে যে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম নামগুলিকে মেনে নেয়নি। পরে কেন্দ্র সেগুলিকে ফের ফেরৎ পাঠায়। তার উত্তরে আদালত জানায়, বিচ্ছিন্ন কোনও উদাহরণ সামনে এনে সাংবিধানিক বেঞ্চের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করতে পারেনা সরকার। বেঞ্চ এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ৬ জানুয়ারি ধার্য করেছেন।