উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে বহিষ্কৃত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার এবং উত্তর প্রদেশ পুলিশের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে নির্যাতিতা তরুণীর বাবাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে খুন করার অভিযোগ আনল দিল্লির এক আদালত। মঙ্গলবার একথা জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। এছাড়াও সেঙ্গার এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে ওই মৃত ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা এবং অস্ত্র আইনের মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগও এনেছে আদালত।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, গত ৯ অগাস্ট দিল্লির আদালতে কুলদীপ সিং সেঙ্গার এবং তাঁর সহযোগী শশী সিংয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় চার্জ গঠন করা হয়। শশী সিং নিগৃহীতাকে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে ফুসলিয়ে সেঙ্গারের বাড়িতে নিয়ে যায়। দুজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৩৬৩ (অপহরণ), ৩৬৬ (বিবাহের উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩৭৬ (ধর্ষণ) ধারা এবং পকসো আইনের অন্যান্য ধারায় চার্জ গঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: উন্নাওয়ের ওঠাপড়া: মেয়ের ধর্ষণ, বাবার মৃত্যু, বিধায়কের জেল ও একটি দুর্ঘটনা
উন্নাও মামলায় অভিযোগকারিণী ১৯ বছরের তরুণী জানিয়েছেন, ৪ জুন, ২০১৭ তারিখে তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার এবং অন্যান্য কয়েকজন মিলে তাঁকে সেঙ্গারের বাড়িতে গণধর্ষণ করেন। সেসময় নাবালিকা ছিলেন তিনি। সেঙ্গারের আদেশেই তাঁর বাবাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পুলিশ মারধর করে বলেও অভিযোগ। কয়েকদিনের মধ্যে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তরুণীর বাবার। এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে ১৩ এপ্রিল, ২০১৮ সালে গ্রেফতার করা হয় সেঙ্গারকে।
এবছরের ২৮ জুলাই এক ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় পড়েন ওই তরুণী, তাঁর দুই আত্মীয়া, এবং তাঁর উকিল। তাঁদের গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে উল্টোদিক থেকে তীব্র গতিতে আসা একটি ট্রাকের। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দুই আত্মীয়ার, মারাত্মক জখম হন তরুণী এবং তাঁর উকিল। পরে জানা যায়, কালো কালি দিয়ে ঢাকা হয়েছিল ট্রাকটির লাইসেন্স প্লেট, যার ফলে শুরু হয় "দুর্ঘটনার" নেপথ্যে কোনও চক্রান্ত আছে কিনা তা নিয়ে জল্পনা। দুর্ঘটনার এক দিন পর ট্রাকের চালক এবং খালাসীকে গ্রেফতার করে উত্তর প্রদেশ পুলিশ।
এর আগে ৮ অগাস্ট সিবিআই-এর তরফে আদালতকে জানানো হয় যে উন্নাও ধর্ষিতার বাবাকে মিথ্যা অস্ত্র আইনে ফাঁসিয়ে তাঁর নামে মামলা দায়ের করেছিল উত্তর প্রদেশ পুলিশ। সিবিআই জানায়, ধর্ষিতার বাবাকে যখন থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তখন দুজন পুলিশকর্মী, অস্ত্র আইনের ওই মামলার অভিযোগকারী এবং বিধায়ক সেঙ্গারের মধ্যে বহুবার ফোনে কথা হয়। অভিযোগ ছিল, ধর্ষিতার বাবার কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল এবং চারটি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে, কিন্তু সিবিআই-এর উকিল অশোক ভারতেন্দু জানান, একাধিক সাক্ষীর সঙ্গে কথা বলেও সে সময়ে ওই ব্যক্তির কাছে কোনও পিস্তল থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় নি।