দেশে ফের বাড়ল করোনা সংক্রমণ, মোকাবিলার প্রস্তুতিতে হাসপাতালগুলিতে শুরু মক ড্রিল। সারা দেশে হুহু করে বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রবিবার সামান্য কমলেও সোমবার ফের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজারের কাছাকাছি। এহেন পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারত আদৌ প্রস্তুত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে সোমবার থেকে দেশজুড়ে শুরু হল মক ড্রিল। দু’দিন ধরে চলবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার মহড়া। সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত হাসপাতালকেই এই মক ড্রিলে অংশগ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশে অ্যাকটিভ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫হাজার। রবিবার, দিল্লিতে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা সাতশো ছুঁইছুঁই। একই সময়ে, সংক্রমণের হার ২১.১৫ শতাংশ।
৭ ইএপ্রিল অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়া সকল রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রীদের হাসপাতাল পরিদর্শন এবং মক ড্রিল পর্যবেক্ষণ করার জন্য অনুরোধ করেন। দেশে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায়, দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫হাজার ৮৮০ জন। অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫,১৯৯ জন। নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকার কারণে সরকারের তরফে সারাদেশের হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি পর্যালোচনা করতে আজ ও মঙ্গলবার দেশব্যাপী মক ড্রিলের ঘোষণা করা হয়েছে। তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মা সুব্রামানিয়ান চেন্নাইয়ের রাজীব গান্ধী জেনারেল হাসপাতালে মক ড্রিল পরিদর্শন করেছেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে ওমিক্রন XBB.1.16 ভেরিয়েন্ট। ক্রমশ মিউটেশনের মাধ্যমে নিজেকে আরও বেশি সংক্রামক করে তুলছে ওমিক্রনের এই ভেরিয়েন্ট। ভারতে এখনও পর্যন্ত নয়া এই ভেরিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ১১৩। যার মধ্যে সিংহভাগই গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে রেকর্ড করা হয়েছে। গত ১৫ মাসে ভারতে ওমিক্রনের চারশো নতুন সাব-ভেরিয়েন্টকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে, সমস্ত ভেরিয়েন্টের ৯০ শতাংশ হল XBB৷ XBB.1.16। মেডিক্যাল বুলেটিন অনুসারে ওমিক্রনের এই সাবটাইপে সংক্রমণের পরিমাণ মোট সংক্রমণের ৩৮.২শতাংশ।
সর্বশেষ INSACOG বুলেটিনে বলা হয়েছে যে XBB.1.16 ভেরিয়েন্টটি এখন পর্যন্ত ভারতে মোট কোভিড সংক্রমণের ৩৮.২ শতাংশ সংক্রমণের জন্য দায়ি। XBB.1.16-ভেরিয়েন্টে আক্রান্তের লক্ষণগুলি মোটামুটি একই। জ্বর, কাশি, সর্দি, সর্দি, মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা, কখনও কখনও পেটে ব্যথা এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ লক্ষিত হচ্ছে এই ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হলে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীরা বাড়িতেই সুস্থ হয়ে ওঠেন তবে কারুর যদি অন্য কোন শারীরিক সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে রোগীকে অনেকসময় হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারে। দেশে আবার মাথা চাড়া দিচ্ছে করোনা সংক্রমণ। তবে এবারে নয়া রূপে। সংক্রমণের হার বাড়ছে তরতরিয়ে। কারণটা আর কিছুই না। বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই নয়া স্ট্রেন সহজেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই স্ট্রেনটি ওমিক্রনের দুটি রিকম্বিন্যান্ট স্ট্রেনের সংমিশ্রন। এটি হাইব্রিড প্রজাতির ভাইরাস। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে গতকালের থেকে আজ কিছুটা কমেছে সংক্রমণ। এদিকে বাড়তে থাকা সংক্রমণের মাঝে শনিবার কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক এবং অনান্য রোগে আক্রান্তদের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করেছে। তিনি রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের পর এই নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, কোভিডে মৃতের মধ্যে বেশিরভাগই ৬০ উর্ধ্ব। তাই তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার দরকার।