করোনা-মুক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ফের Covid-19 পজিটিভ হচ্ছেন যেসব রোগী, তাঁরা সম্ভবত অন্য কাউকে সংক্রমিত করতে পারবেন না, বলছে দক্ষিণ কোরিয়ার এক গবেষণা।
কোরিয়ান সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC)-এর বিজ্ঞানীরা ২৮৫ জন রোগীর সমীক্ষা করেছেন, যাঁরা করোনা-মুক্ত ঘোষিত হওয়ার পরেও ফের তাঁদের দেহে মিলেছে ভাইরাসের উপসর্গ।
এই তথাকথিত দ্বিতীয়বার পজিটিভ রোগীরা কোনোরকম সংক্রমণের রেশ রেখে যাচ্ছেন, এমন প্রমাণ পাওয়া যায় নি, এবং তাঁদের দেহ থেকে সংগৃহীত ভাইরাসের নমুনা 'কালচার' করা যায় নি, অর্থাৎ ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার উপযুক্ত করে তোলা যায় নি। এর অর্থ হলো যে এই রোগীরা যে ভাইরাস কণিকা ত্যাগ করছেন, সেগুলি মৃত কণিকা, যার দ্বারা সংক্রমণ সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: করোনা প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে অশ্বগন্ধা
সোমবার গভীর রাতে প্রকাশিত এই তথ্য সাহস জোগাবে পৃথিবীর এমন অনেক অঞ্চলেই, যেখানে রোগীদের করোনা-মুক্তির হার বৃদ্ধি পেতেই ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে লকডাউন। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে পৃথিবীময় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ। দক্ষিণ কোরিয়ার এই গবেষণা যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তাতে দূরত্ব-বিধি শিথিল করলেও Covid-19 থেকে মুক্ত রোগীদের রোগ ছড়ানোর কোনও ঝুঁকি নেই।
এই গবেষণার ফলস্বরূপ দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ রোগমুক্ত করোনা আক্রান্তদের আর সংক্রামক হিসেবে গণ্য করবেন না। গত মাসের এক গবেষণায় প্রকাশ পায় যে করোনাভাইরাসের নিউক্লেইক অ্যাসিড নির্ধারণ করার জন্য তথাকথিত PCR পরীক্ষা মৃত এবং সক্রিয় ভাইরাস কণিকার মধ্যে তফাৎ করতে অক্ষম। এর ফলে দ্বিতীয়বার কেউ পজিটিভ হলেও তিনি সংক্রামক, এই ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি হতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে সংশোধিত নীতি অনুযায়ী, কর্মস্থানে বা স্কুলে ফেরার আগে করোনা নেগেটিভ হওয়া আর বাধ্যতামূলক থাকবে না, যদি আক্রান্ত ব্যক্তি সম্পূর্ণ রোগমুক্ত হন এবং তাঁর আইসোলেশনের মেয়াদ পূর্ণ হয়ে গিয়ে থাকে।
কোরিয়ার CDC জানিয়েছে যে এখন থেকে "পুনরায় পজিটিভ' রোগীর ক্ষেত্রে তাঁরা বলবেন, "আইসোলেশন থেকে ছাড়া পাওয়ার পর PCR দ্বারা পুনরায় চিহ্নিত"।
কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, প্রথম সংক্রমণের ৮২ দিন পর পর্যন্ত সংক্রমণের লক্ষণ মিলেছে। তবে এই ধরনের প্রায় সমস্ত রোগীর ক্ষেত্রেই রক্তে পাওয়া গিয়েছে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন