আগ্রার রেনু সিঙ্ঘলের ছবি এখন নেটমাধ্যমে ভাইরাল। নিজের অক্সিজেন দিয়ে করোনা আক্রান্ত স্বামীকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করেছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। স্ত্রীয়ের কোলেই ঢলে পড়েন রবি সিঙ্ঘল।
জানা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত স্বামীর প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হতেই তাঁকে নিয়ে অটোতে করে হাসপাতালের দিকে রওনা দিয়েছিলেন রেনু। তবে অটোর মধ্যেই স্বামীর শ্বাসকষ্ট আরও বাড়ে। নিরুপায় হয়ে স্বামীকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা শুরু করেন রেণু। স্বামীর মুখে মুখ দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে তাঁকে শ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন স্ত্রী।
কিন্তু সোমবার হাসপাতালের বাইরে রেণুর কোলে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন স্বামী। গোটা এই ঘটনায় ফের এক বার ফুটে উঠছে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার করুণ দশার ছবি। পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের আবাস বিকাশ সেক্টর ৭-এর বাসিন্দা রবি সিঙ্ঘলের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হওয়ায় তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা হয়েছিলেন রেণু। অটোতে করে তড়িঘড়ি পৌঁছতে চেয়েছিলেন সরোজিনী নাইডু মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তবে সেই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানোর আগেই রবির শ্বাসকষ্টের সমস্যা গুরুতর হয়ে শুরু করে। স্বামীকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে এরপর অটোর মধ্যেই তাঁকে কৃত্রিম উপায় বাঁচানোর চেষ্টা শুরু করেন রেণু। তবে শেষমেশ রবিকে বাঁচাতে পারেননি তিনি।
এদিকে, মাত্র দশ দিন আগে, নীতি আয়োগের সদস্য ড ভি কে পলের নেতৃত্বে অফিসারদের একটি গুপ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক-সহ কর্তৃপক্ষকে বলেছিলেন যে দেশে তিন লক্ষ নতুন করোনা আক্রান্তের কেসের জন্য অক্সিজেনের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে এবং জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ২০ এপ্রিলের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই তথ্যর সত্যতা আজ নিশ্চিত। এবার আগামী দিনে দৈনিক ৬ লক্ষ কোভিড কেস নিয়ে সতর্ক করা হল।
স্বাস্থ্য পরিকাঠানো এবং কোভিড ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান সম্পর্কিত একটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ভি কে পল। যে হারে দেশে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার বাড়ছে সেই প্রেক্ষিতে এবার ‘প্ল্যান বি’ অর্থাৎ বিকল্প পরিকল্পনা ভাবতে হবে দেশকে এমনটাই বলা হয়েছে সুপারিশে।
এই গোটা বিষয়টি অপর একটি বিশেষ গ্রুপকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিল্প ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বিভাগের সচিব ডঃ গুরুপ্রসাদ মহাপাত্রের অধীনে কাজ করছে এই দলটি। যাঁদের মূল লক্ষ্য আক্রান্ত রাজ্যগুলিতে যাতে অক্সিজে-সহ কোভিড চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছয় তা নিশ্চিত করা।
একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানান হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে বিকল্প কঠোর কোভিড পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে অবিলম্বে। বিজ্ঞপ্তিতে এও জানান হয়েছে যে বর্তমানে যে পরিকাঠামো এবং পরিকল্পনা রয়েছে। তা দিয়ে আগামী দিনে এই ভাইরাকে রুখতে পারা সম্ভব নয়।