গড়চিরৌলি থেকে এক নকশালপন্থী দম্পতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম নর্মদা এবং কিরণ। অভিযোগ, গত মে মাসে যে এলইডি বিস্ফোরণে ১৫ জন নিরাপত্তাকর্মী মারা যান, তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার গড়চিরৌলির দক্ষিণে তহশিল এলাকার সিরঞ্চা থেকে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
গড়চিরৌলির পুলিশ সুপার শৈলেশ বালকাওদে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "সোমবার সন্ধ্যায় ওই দম্পতি হায়দ্রাবাদ থেকে সিরঞ্চায় এসেছিলেন। তখনই আমরা ওঁদের আটক করি। জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার রাতে ওঁদের গ্রেফতার করা হয়।" প্রসঙ্গত, নর্মদা দীর্ঘদিন যাবত ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তিনি হায়দ্রাবাদে কেমোথেরাপি নিতে গিয়েছিলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, "আমরা গত ৭-৮ মাস যাবত নর্মদার গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখছিলাম। অবশেষে তেলেঙ্গানা পুলিশের সঙ্গে সংযোগ রেখে ওঁকে গ্রেফতার করা গেল।" তিনি জানান, নর্মদার নামে খুন-সহ মোট ৬৫টি অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতার সময় কিছুটা হতচকিত হয়ে পড়েছিলেন ৬৫ বছরের ওই মহিলা।
পুলিশ সূত্রের খবর, নর্মদা স্তন ক্যানসারে ভুগছেন। গত কয়েক বছর যাবত স্বাস্থ্যের অবনতির দরুন তিনি ঠিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। প্রসঙ্গত, প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছিল, কিরণের বয়স ৫৭। কিন্তু পরে যে প্রেস নোট দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে তিনি ৭০ বছর বয়সী।
পুলিশ প্রাথমিক ভাবে নর্মদাকে আত্মসমর্পন করতে বলেছিল। তাঁকে বলা হয়, সেক্ষেত্রে পুলিশ তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়টি দেখভাল করবে। কিন্তু নর্মদা সেই প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় পুলিশ ওই মাওবাদী নেত্রীকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের সঙ্গে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদের সময় নর্মদাকে গত বছর ৪০ জন ক্যাডারের মৃত্যু-সহ মাওবাদীদের সার্বিক পিছু হটার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। নর্মদা উত্তরে জানান, যুদ্ধে অগ্রগতি যেমন থাকে, তেমনই পিছিয়েও আসতে হয়। ক্যাডারদের মৃত্যুতে শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে ঠিকই, দক্ষিণ বস্তারে বেশ কিছু নতুন নিয়োগের মাধ্যমে পূর্ণ করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, নর্মদার গ্রেফতারিকে গড়চিরৌলি পুলিশ বড় সাফল্য বলে মনে করছে। কিন্তু তাঁর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণে আদৌ মাওবাদীর খবর বের করার জন্য চাপ দেওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে পুলিশের আধিকারিকদের মধ্যেই।
অবিভক্ত অন্ধপ্রদেশের শ্রীকাকুলমে তাঁর ছাত্রাবস্থায় নকশালপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন নর্মদা। ১৯৮২ সালে তিনি সিপিআইএমএল (জনযুদ্ধ) গোষ্ঠীতে যোগ দেন। ১৯৯৫ সালে তাঁকে গড়চিরৌলিতে পাঠানো হয়। তারপর থেকে তিনি দণ্ডকারণ্যেই সক্রিয় ছিলেন। ২০১২ সালে দক্ষিণ দণ্ডকারণ্যে সংগঠনের দায়িত্ব পান নর্মদা।