Advertisment

৮ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন সমীর ওয়াংখেড়ে! প্রমোদতরী কাণ্ডে বোমা ফাটালেন সাক্ষী

প্রভাকর সায়েল দাবি করেছেন, নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো তাঁকে দিয়ে দিয়ে ১০টি সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sameer Wankhede, Cruise ship drug bust case

এনসিবি আঞ্চলিক অধিকর্তা সমীর ওয়াংখেড়ে

মুম্বইয়ে প্রমোদতরী কাণ্ডে ভয়ঙ্কর অভিযোগে বিদ্ধ এনসিবি। প্রমোদতরী কর্ডেলিয়ার এক সাক্ষী প্রভাকর সায়েল দাবি করেছেন, নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো তাঁকে দিয়ে দিয়ে ১০টি সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে। সায়েলের দাবি, তিনি স্বঘোষিত প্রাইভেট ডিটেকটিভ কেপি গোসাভির দেহরক্ষী। এই গোসাভিই হলেন সেই ব্যক্তি যিনি এনসিবি অফিসে আরিয়ান খানের সঙ্গে সেলফি পোস্ট করেছিলেন। তারপর থেকেই বেপাত্তা গোসাভি। তাঁকে খুঁজছে মুম্বই ও পুণে পুলিশ।

Advertisment

সায়েল আরও দাবি করেছেন, এনসিবি-র জোনাল হেড সমীর ওয়াংখেড়ে, যিনি কি না সেদিন ছদ্মবেশে প্রমোদতরীতে আরিয়ানদের ধরেছিলেন, তাঁকে ৮ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন গোসাভি। যেহেতু গোসাভি নিরুদ্দেশ, তাই এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সায়েল। পাঁচ পাতার হলফনামায় সায়েল বলেছেন, ২ অক্টোবর সকালে গোসাভি তাঁকে এনসিবি অফিসে যেতে বলেন। সেই দিন সন্ধেয় কর্ডেলিয়া ক্রুজে অভিযান চালায় এনসিবি। সায়েলের দাবি, "সেই সময় গোসাভি এনসিবি আধিকারিকদের সঙ্গে ছিলেন। ক্রুজের ওয়েটিং এরিয়া গ্রিন গেটের কাছে তাঁকে অপেক্ষা করতে বলেছিলেন গোসাভি।"

হলফনামায় সায়েল বলেছেন, "দুপুর ১.২৩ নাগাদ গোসাভি আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে কিছু ছবি পাঠান আর বলেন, ছবিতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে তাঁদের চেনার জন্য। আর জানাতে এঁদের মধ্যে কেউ সেদিন ক্রুজ শিপে আসছে কি না গ্রিন গেট হয়ে। আমি তাই অপেক্ষা করছিলাম সেখানে। তারপর ছবির একজনকে চিনতে পারি সেখানে আমি গোসাভিকে জানাই বাস নম্বর ২৭০০ চেপে সে ক্রুজে উঠল। ৪.২৩ নাগাদ গোসাভি মেসেজের রিপ্লাই দেন, সেই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে ধরা হয়েছে এবং আরও ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।"

সায়েল বলেছেন, "এরপর গোসাভি আমাকে ভিতরে ডাকেন এবং আমি তাঁকে দেখি আরিয়ান খানের সঙ্গে একটি কেবিনে। সেখানে মুনমুন ধামেচাও ছিলেন। এরপর আরিয়ানকে এনসিবি গোয়েন্দারা সেখান থেকে অফিসে নিয়ে গেলে আমিও যান সেখানে।" সায়েল হলেন এই ঘটনার ৯ জন সাক্ষীর একজন। তিনি দাবি করেছেন, এনসিবি আধিকারিকরা তাঁকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়েছেন।

হলফনামায় তিনি বলেছেন, "রাত একটা নাগাদ আমাকে গোসাভি ফোন করে বলেন, পঞ্চনামার জন্য আমাকে একটা কাগজে সই করতে হবে। আমাকে এনসিবি অফিসে ডাকা হয়। আমি সেখানে যাই আর সমীর ওয়াংখেড়ে তাঁর কর্মীদের বলেন আমার সই আর নাম নেওয়ার জন্য। এনসিবি-র সালেরকর নামে একজন আমাকে ১০টি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। এরপর গোসাভি এনসিবি অফিসের বাইরে এসে স্যাম ডিসুজা নামে একজনের সঙ্গে দেখা করেন আর টাকার বিষয়ে কথা বলছিলেন।"

হলফনামায় বলা হয়েছে, "তারপর আমরা লোয়ার পারেলে পৌঁছতে পৌঁছতে গোসাভি ফোনে স্যামের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ফোনে তিনি বলেন, ২৫ কোটি টাকার বোমা রেখেছ, ১৮ তেই সমঝোতা করো, কারণ সমীর ওয়াংখেড়েকে ৮ কোটি টাকা দিতে হবে। এরপর গোসাভি এবং ডিসুজা পূজা দাদলানি নামে এক মহিলার সঙ্গে দেখা করেন। গোসাভি আমাকে বলেন তারদেও সিগন্যালের কাছে গিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা নিতে। আমি সেখানে সকাল ৯.৪৫ নাগাদ যাই। ওখানে একটি সাদা রঙের গাড়ি আসে আর আমাকে দুটো ব্যাগভর্তি টাকা দেওয়া হয়। সেই টাকা নিয়ে আমি ভাসিতে কিরণ গোসাভির বাড়িতে এসে টাকা দিয়ে দিই।"

আরও পড়ুন শাহরুখ বিজেপিতে যোগ দিলেই ড্রাগস হয়ে যাবে চিনির গুঁড়ো: মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী

"এরপর সেই টাকা আমাকে গোসাভি বলেন স্যামকে দিতে ট্রাইডেন্ট হোটেলের কাছে গিয়ে। সেই দিন থেকে গোসাভি নিরুদ্দেশ। আমার ভয় করছে গোসাভিকে মনে হয় খুন করা হয়েছে। এই খুনে এনসিবি আধিকারিকরা জড়িত আছেন, আমাকেও গোসাভির মতো তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হতে পারে। এরকম বড় কেসে অনেক সময় সাক্ষীদের খুন বা গুম করে দেওয়া হয় যাতে সত্যি না বাইরে আসে।" এদিকে, এই ভয়ঙ্কর অভিযোগের পাল্টা ওয়াংখেড়ে বলেছেন, তিনি এর জবাব দেবেন পরে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Aryan khan Mumbai NCB drug case Sameer Wankhede Kiran Gosavi
Advertisment