মঙ্গলবার রাতেই মহারাষ্ট্রে ১৫ দিনের কার্ফু ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তবে তার কয়েকদিন আগে থেকেই এমনটা হতে পারে তা অনেকেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। যেভাবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে রাজ্য, তাতে আশঙ্কার মেঘ জমেছিল অনেকের মনে। এই বুঝি আবার লকডাউন হয়ে যায়। আর সেই আশঙ্কায় সোমবার থেকেই একে একে রাজ্য ছাড়ার হিড়িক পড়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে।
মঙ্গলবার উদ্ধবের ঘোষণার আগেই ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাসে ভিড় জমাতে শুরু করেন পরিযায়ীরা। বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেনের টিকিট কেটেই রেখেছিলেন তাঁরা। অনেকে সংরক্ষিত টিকিট না পেয়ে সাধারণ টিকিটেই কোনওরকমে মুম্বই ছেড়েছেন। যদিও মধ্য রেল এবং পশ্চিম রেলওয়ে উত্তর ভারতে যাওয়ার দৈনিক ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়েছে। তাও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ২ হাজারেরও বেশি মানুষ ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন। গত বছরের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা থেকেই আগেভাগে তাঁরা ঘরে ফেরার তোড়জোড় করেন।
উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের বাসিন্দা প্রদীপ কুমার যাদব বলেছেন, "আমার ভাগ্য ভাল যে সংরক্ষিত টিকিট পেয়েছি। গোরেগাঁওয়ে একটা আসবাবের দোকানে কাজ করি। দোকান এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে, মালিকও আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলেছে। দুমাস আগেই আমি মুম্বইয়ে এসেছি। তার আগে লকডাউনের সময় বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। আমি জানি না, কাজ ছাড়া কীভাবে চলবে, কিন্তু যা হচ্ছে হয়তো ভালর জন্যই হচ্ছে। এই অতিমারীতে সবাই খুব কষ্টে আছে।"
উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বাসিন্দা, পেশায় হীরে পালিশ কর্মী মনু গুপ্তার কথায়, "যেখানে কাজ করি, ওরা বলছে এক-দু সপ্তাহের জন্য কোম্পানি বন্ধ থাকবে। কিন্তু গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আর ওদের বিশ্বাস হয় না। আমার মনে হয়, কার্ফু এক-দুমাসের জন্য বাড়ানো হবে। তাই বাড়ি যাচ্ছি, কার্ফু শেষ হলেই ফিরব।"